জলহস্তীর পর আসছে জিরাফ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জলহস্তীর পর এবার তিনটি জিরাফ আনার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নবনির্মিত কুমির ও জলহস্তীর খাঁচা উদ্বোধনের সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘রংপুর চিড়িয়াখানায় আমরা দু’টি বাঘ দিয়েছি। তার বিনিময়ে ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে দু’টি জলহস্তী পেয়েছি। এর মধ্যে একটি নিয়ে আসা হয়েছে। আরেকটি এক সপ্তাহ পর আসবে। যেটা আনা হয়েছে তার নাম লাল পাহাড়। এটি জনসাধারণের জন্য আমরা উন্মুক্ত করেছি। এখন নতুন করে আমাদের কুমিরের খাঁচা তৈরি করা হয়েছে। আগে যে কুমিরের খাঁচা ছিল সেখানে বাইরে থেকে বুঝা যেত না। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমরা তিনটি সিংহ এনেছি।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পাশাপাশি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আরও দু’টি প্রাণী আনা হবে। এর মধ্যে তিনটি জিরাফ ও পাঁচটি আমেরিকান ফ্লেমিঙ্গো পাখি। ইতোমধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার করা হয়েছে। জিরাফগুলো তানজেনিয়া থেকে আসবে। মাস খানেকের মধ্যেই সেগুলোর ডেলিভারি পেয়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ১০ একর জমির উপর অবস্থিত। পাশেই কিছু খাসজমি ছিল। সেই জমি অনেকদিন অবৈধ দখলদারদের হাতে ছিল। জায়গাটি দখলমুক্ত করে বাউন্ডারি দেয়াল করছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ওই দখলমুক্ত জায়গাটিকে আমরা বার্ডসপার্ক করব। বিভিন্ন ধরনের পাখি যদি আমরা রাখতে পারি জনসাধারণ সেগুলো দেখতে পারবেন। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজম্ম বিভিন্ন ধরণের প্রাণী সম্পর্কে জানতে পারবে, শিখতে পারবে।’
জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে দু’টি বাঘের বিনিময়ে ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে এক জোড়া জলহস্তী আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে একটি আমরা পেয়েছি। এটা পুরুষ। তার নাম লাল পাহাড়। তার ওজন প্রায় ১ হাজার ২০০ কেজি ও বয়স ১২ বছর। ২০১১ সালের তার জন্ম। আরেকটি শুক্রবার নাগাদ পেতে পারি। এরা মূলত সবজি ও ফলমূল খায়।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দুই বছর বয়সী এক জোড়া বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় পৌঁছে দেওয়া হয়। বিনিময়ে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে ১২ বছর বয়সী একটি পুরুষ জলহস্তী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়।
জানা গেছে, ২০২১ সালের শেষদিকে মন্ত্রণালয়ের কাছে জলহস্তী চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রহমান। এ প্রক্রিয়া অগ্রসর না হওয়ায় ২০২২ সালের ২২ আগস্ট ফের চিঠি দেওয়া হয়।
ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় বিনিময় হিসেবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে রংপুরের জন্য এক জোড়া বাঘ এবং ঢাকার জন্য এক জোড়া সাম্বার হরিণ ও এক জোড়া ইন্দোনেশিয়ান আয়াম সিয়ামি মোরগ দেয়ার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ পাঠানো এবং জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে জলহস্তী চট্টগ্রামে আনার যাবতীয় ব্যয়ভার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কাছে বহন করার শর্ত দেওয়া হয়।
গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রংপুরে বাঘ পাঠানো এবং ঢাকা থেকে জলহস্তী আনার ব্যয়ভার বহন করার শর্ত মেনে নিয়ে চিঠি দেয়। অন্য প্রাণীগুলো চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত না থাকায় সেগুলো প্রজনন সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জলহস্তী দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায় মন্ত্রণালয়।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম