সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্ত
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২২
ঢাকা: অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এজন্য ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান একাডেমিক ল্যাবরেটরিগুলোর উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হবে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭টি বিভাগের ৭৯টি ল্যাবরেটরির জন্য বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনার মাধ্যমে বিদ্যমান ল্যাবরেটরিগুলোর উন্নয়ন করা হবে। এর মাধ্যমে প্রতিবছর তিন হাজার শিক্ষার্থীকে প্রায়োগিক কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও বিদেশের চাহিদা পূরণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিলেট সিটি করপোরেশন। প্রস্তাবটি নিয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নানিমা বেগম। সেখানে নানা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি অনুষদ এবং ৪৭টি বিভাগে শিক্ষা ও গবেষণা কাজ কর্ম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা, সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনার জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যলয় রিসার্চ সিস্টেম (সাউরেস), আইকিউএসি ও বহিরাঙ্গণ বিভাগ।
এছাড়াও ৬টি আবাসিক হল (৪টি ছাত্রদের এবং ২টি ছাত্রীদের), কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, টিএসসি ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ৬টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। এগুলো ছাড়াও ১০টি আবাসিক ভবনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ৩ হাজার ৬০৪ জন (স্নাতক ১ হাজার ৭৩৩ জন, স্নাতকোত্তর ১ হাজার ১৮ জন এবং ৬ জন পিএইচডি) জন গ্রাজুয়েট তৈরি করেছে। যারা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় দেশে ও বিদেশে কর্মরত। এরমধ্যেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক গবেষণা প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন শস্যের উন্নত জাত, লাইভ-স্টক ম্যানেজমেন্ট প্যাকেজ এবং প্রযুক্তি প্রয়োগের কলাকৌশল উদ্ভাবন করে কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত কোর্স কারিকুলার কৃষি গ্রাজুয়েট বের হবে। যারা সারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে।
তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম আর্থিক সংকট রয়েছে। ফলে যথাযথ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি, শিক্ষাসামগ্রী সংগ্রহ, পরিবহন সুবিধা, ইন্টারনেট সুবিধা বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ অঙ্গে ২০ লাখ টাকা প্রস্তাব করে আধুনিক ল্যাবরেটরিজ যন্ত্রপাতির ওপর ১৭০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ১০০ জনকে প্রকল্প মূল্যায়ন, ব্যবস্থাপনা ও আইবাস ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করার কথা। প্রকল্প প্রণয়ন, ব্যবস্থাপনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পিএমআইএস ইত্যাদি বিষয়গুলো রাজস্ব খাত হতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ থাকায় তা বাদ দেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া আধুনিক ল্যাবরেটরিজ যন্ত্রপাতির ওপর ১৭০ জনকে প্রশিক্ষণের বিষয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা সংশোধিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) যুক্ত করতে হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রতিটি অঙ্গের ব্যয়ে সুস্পষ্ট পরিমাণগত সংখ্যা উল্লেখ করতে হবে বলে জানানো হয় পিইসি সভায়। অর্থ বিভাগে জারি করা হালনাগাদ পরিপত্র অনুসরণ, ইকোনমিক কোড ও সাব-কোডসহ অন্যান্য সম্পাদনার ক্রুটি বিচ্যুতি ও অসঙ্গতি সংশোধন করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া আরও বলা হয়েছে, সময়ের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) সংযুক্ত করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) ও স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি) ২০২২ অনুসরণে পুনর্গঠিত করতে হবে। প্রকল্প প্রস্তাবে ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি ও প্রাইস কন্টিনজেন্সি প্রস্তাব না করার কারণ জানতে চাওয়া হয় সভায়।
সভা সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় কি কি একাডেমিক ল্যাবরেটরির মেরামত ও সংরক্ষণ বা পূর্ত করা হবে তার বিবরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রেট সিডিউলের বিবরণসহ মূল্য নির্ধারণ সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট তথ্য, কাজের পরিমাণ সভায় পর্যালোচনা করা হয়। কি পরিমাণ আধুনিকায়ন ও কি পরিমাণ সংস্কার কাজ করা হবে তার বিবরণ ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও