Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিজিএফআই-র‌্যাবের অভিযানে রাজধানীতে ৬ জঙ্গি গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:২৮

ঢাকা: ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) যৌথ অভিযানে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে র‌্যাব-১ ও ডিজিএফআই এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- আনসার আল ইসলামের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর (৫০), শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা (৪৯), সাদী মো. জুলকার নাইন (৩৫), মো. কামরুল হাসান সাব্বির (৪০), মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬), সাঈদ মো. রিজভী (৩৫)।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ২টি ল্যাপটপ, ৬টি মোবাইল ফোন, উগ্রবাদে সহায়ক বই ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত ডায়েরি ও নোট বই জব্দ করা।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছিল। সংগঠনে যুক্ত হয়ে তারা দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করকো। এছাড়া গ্রেফতাকৃতরা বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেদের আত্মীয়-স্বজন থেকে টাকা নিয়ে আসতো সংগঠনের খরচ চালানোর জন্য।’

তারা পাশের বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখত এবং বিভিন্ন উগ্রবাদি গ্রুপে বিচরণ করতো।

বিজ্ঞাপন

মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, ‘গ্রেফতার মেজবাহ ওরফে আবু মাসরুর একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে। পরে সে উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপে যায়। ২০১০ সাল থেকে সে ডেনমার্কে সপরিবারে বসবাস শুরু করে। ডেনমার্কে গ্রেফতার হওয়া আশিকুরের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয় মেজবা। পরে ২০২২ সালের অক্টোবরে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে বাংলাদেশে এসে সংগঠনের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। সে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সংগঠনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করত বলে জানা যায়। ঢাকা, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষীপুর, ভোলা এবং খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সফর, সভায় অংশগ্রহণ এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায় করত।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতার আশিকুর রহমান এমবিএস করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবসাও করত। সে সংগঠনের ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম উপদেষ্টা ও অর্থের যোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। গ্রেফতার সাদী মো. জুলকার নাইন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরি করতো। সে দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতো।’

এছাড়া গ্রেফতার সাঈদ মো. রিজভী পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থানের সময় উগ্রবাদী মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন। পরে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেজবাহর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তার মাধ্যমে সংগঠনে যোগ দেয় এবং সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিতো। রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় তার বাসা। সেই বাসায় প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর সংগঠনের সভা অনুষ্ঠিত হতো। ওই বাসায় নতুন সদস্যদের সংগঠনে যুক্ত করার আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন হতো। এছাড়াও তার বাসায় সংগঠনের নতুন সদস্যদের শারীরিক কসরত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সম্প্রতি ডিজিএফআই ও র‍্যাবের অভিযানে আনসার আল ইসলামের প্রায় ২০ জন সদস্যকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংগঠনটি মূলত কাট অব চেইনের পদ্ধতিতে কাজ করে। গ্রেফতার জঙ্গি মেজবাহর সঙ্গে আনসার আল ইসলামের নেতা আবু ইমরান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ করে।’

আনসার আল ইসলামের নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, নাইখ্যংছড়িতে একটি মাদরাসায় ২০২০ সালে তার সঙ্গে মেজর জিয়ার দেখা হয়েছিল। এরপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মেজর জিয়ার নেতৃত্বে আনসার আল ইসলাম পরিচালিত হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, তার সরাসরি নেতৃত্বে সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে কি না এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

৬ জঙ্গি গ্রেফতার ডিজিএফআই র‍্যাব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর