Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৬

ঢাকা: কুকুর-বিড়ালের মাংস দিয়ে রেস্তোরাঁ ব্র্যান্ড সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানিতে কুকুর-বিড়ালের মাংস নয়, খাসিই ছিল মর্মে অপপ্রচারের অভিযোগে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এই প্রতিবেদন দাখিল করেন পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নাজিম উদ্দিন।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ওই দুই ব্যক্তি হলেন- কনক লায়লা ও আবদুল হাকিম। তারা বেসরকারি যমুনা ব্যাংকের খণ্ডকালীন কর্মকর্তা ছিলেন।

গত ৩ এপ্রিল কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের পরিবর্তে কুকুর-বিড়ালের মাংস দেওয়ার মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেন সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক কামাল আহমেদ। আদালত অভিযোগ বিষয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পিবিআইয়ের প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, সুলতান’স ডাইন খাসির মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানিই সরবরাহ করেছিল। কনক লায়লা ও আবদুল হাকিম ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রচার চালিয়েছিলেন যে, কাচ্চিতে খাসির মাংসের বদলে কুকুর-বিড়ালের মাংস খাওয়াচ্ছে সুলতান’স ডাইন। যা দণ্ডনীয় অপরাধ।

জানা যায়, সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানি নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য ফেসবুকে প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে খণ্ডকালীন কর্মকর্তা কনক লায়লা ও আবদুল হাকিমকে যমুনা ব্যাংকের খণ্ডকালীন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ২ মার্চ সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখায় সাতটি হাফ (অর্ধেক) কাচ্চি বিরিয়ানি কেনার আদেশ দেন যমুনা ব্যাংকের বনানী শাখার তৎকালীন কর্মকর্তা কনক লায়লা। সেদিন দুপুরে টাকা পরিশোধ করে তিনি খাবার নিয়ে যান। বেলা আড়াইটার দিকে কনক লায়লা সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখার হটলাইন নম্বরে ফোন দেন তিনি। খাবার নিয়ে সুলতান’স ডাইনের সহকারী মহাব্যবস্থাপকের কাছে অভিযোগ করেন। পরে সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক কামাল আহমেদ দুই প্যাকেট কাচ্চি বিরিয়ানি নিয়ে যমুনা ব্যাংকের বনানী শাখায় যান। তখন কনক লায়লা সুলতান’স ডাইনের কর্মকর্তা কামালের কাছে অভিযোগ করেন, কাচ্চিতে খাসির মাংসের পরিবর্তে বিড়ালের মাংস দেওয়া হয়েছে। তিনি কামালকে হুমকি দিয়ে বলেন, র‌্যাব ডেকে ধরিয়ে দেবেন। কামালকে যমুনা ব্যাংকের নিচতলায় আটকে রাখা হয়। তখন তার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন আবদুল হাকিম। একপর্যায়ে সুলতান’স ডাইনের লোকজন গিয়ে কামালকে উদ্ধার করেন।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা যায়, ঘটনার তিন দিন পর গত ৫ মার্চ কনক লায়লা ফেসবুকে লিখেন, ৩ মার্চ সুলতান’স ডাইন থেকে সাতটি কাচ্চি আনেন। খাওয়ার সময় মাংসের হাড় দেখে সন্দেহ হয় তার। কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের পরিবর্তে কুকুর-বিড়ালের মাংস খাওয়াচ্ছে। পরবর্তীতে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চিতে খাসির মাংসের পরিবর্তে কুকুর-বিড়ালের মাংসের ব্যবহার নিয়ে কনক লায়লার ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সবার নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়।

এ নিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বার্তা বিভাগের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পিবিআই। জানা যায়, সুলতান’স ডাইন কাচ্চি বিরিয়ানিতে যে খাসির মাংস দেওয়া হয়, তার ওজন ছয় থেকে নয় কেজি। বেশি ওজনের খাসির মাংস সেদ্ধ হয় কম। তাই সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে, বেশি ওজনের খাসির মাংস কাচ্চিতে দেওয়া যাবে না।

রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ গত মার্চে তদন্ত করেছিল জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এই তদন্তে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেওয়ার অভিযোগের প্রমাণ পায়নি সরকারি সংস্থাটি। কাচ্চিতে খাসি বাদে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় সুলতান’স ডাইনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় অধিদফতর।

সারাবাংলা/এআই/এনএস

সুলতান’স ডাইন