Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘণ্টায় ২৩ মিনিট যানজটে বসে থাকতে হয়: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫১

বুধবার পরিবেশ দূষণ নিয়ে সংলাপ করে সিপিডি। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: যানজটকে রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানাচ্ছে, এই শহরে প্রতি দুই ঘণ্টায় ৪৬ মিনিট যানজটের কারণে রাস্তায় বসে থাকতে হয়। সে হিসাবে প্রতি ঘণ্টায় ২৩ মিনিট করে সময় অপচয় হচ্ছে যানজটে। কেবল সময় নষ্টই নয়, যানজটের কারণে পুড়ছে বাড়তি জ্বালানি, সার্বিকভাবে নষ্ট হচ্ছে উৎপাদনশীলতা।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সংলাপে সিপিডির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ‘সবুজ নগরীর জন্য দূষণ হ্রাস’ শীর্ষক সংলাপে গবেষণাপত্র উপস্থাপনা করেন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। সংলাপে সিপিডি দূষণ কমাতে ১১টি সুপারিশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহামিদা খাতুন সংলাপটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।

সংলাপে ফাহামিদা খাতুন বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে পরিবেশকে ধ্বংস করে। পরিবেশ না বাঁচিয়ে উন্নয়ন করলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না।

বায়ু ও পলিথিনকে পরিবেশ দূষণের প্রধান দুটি উৎস অভিহিত করা হয়েছে সংলাপে। এ ছাড়া নির্মাণ, যানবাহন, শিল্প, ইটের ভাটা থেকেও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এসব দূষণের কারণে মানুষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে। বিশেষ করে শিশুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে হলে আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন, প্রয়োজন সচেতনতাও।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, সড়ক তৈরিতে প্রধানমন্ত্রীকে ধোঁকা দিয়ে ফাইল পাস করে গাছ কাটার ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী এখন বুঝে গেছেন। কোনো ফাইল এলেই সেই প্রকল্পে গাছ কাটা হচ্ছে কি না, পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না, সেগুলো যাচাই করেন। তারপর ফাইল পাস করেন। পরিবশেবান্ধব নয়, এমন অনেক ফাইল তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক আইন আছে। কিন্তু বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ নেই। এটি সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তা না হলে আমাদের অনেক মত ও পথ থাকলেও লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। তাই পরিবেশ উন্নয়নে ব্যক্তি মানুষকে সচেতন হতে হবে। গোলটেবিলে পরিবেশ রক্ষার কথা বলে বাসায় গিয়ে পলিথিন ব্যবহার করব— এমন হলে হবে না। সচেতন না হলে আইন দিয়ে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না, ব্যবহারও বন্ধ হবে না। এর থেকে সৃষ্ট পরিবেশেরও ক্ষতি রোধ করা যাবে না।

পরিবেশ রক্ষায় সিপিডি ১১টি সুপারিশ তুলে ধরেছে। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— ইটের ভাটা ও কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া ও পাঁচ বছরের মধ্যে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটা তুলে দেওয়া; সরকার ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে, সেগুলো যেন নতুন করে চালু না হয়; কয়লা থেকে সরে গিয়ে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রণোদনা দেওয়া; প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রিতে যুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা, কর বাড়িয়ে প্লাস্টিক কারখানাকে নিরুৎসাহিত করে জনগণের ওপর চাপ তৈরি করা; প্লাস্টিক পণ্য বাদ দিয়ে বিকল্প পরিবেশসম্মত কাগজ বা কাপড়ের পণ্য উৎপাদন করতে চাইলে তাদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়া এবং প্রয়োজনে সহজ শর্তে ঋণ দিতে দেওয়া; যে পরিবেশের দূষণ করবে তাকে আর্থিক দণ্ডসহ অন্য সব শাস্তির আওতায় আনা নিশ্চিত করা।

সুপারিশে আরও বলা হয়েছে— পরিবেশ সহায়ক নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ভর্তুকি বাড়ানো; এ সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালাগুলো আপডেট করা; এ সম্পর্কিত আইন প্রয়োগ করতে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোকে শক্তিশালী করা, জবাবহিদিতা তৈরি করা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; আইনের সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করা যেন কেউ আইনের ঊর্ধ্বে চলে না যায়; এবং জনসচেতনতা তৈরি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

ঢাকার যানজট পরিবেশ উপমন্ত্রী যানজট সিপিডি হাবিবুন নাহার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর