‘একতরফা নির্বাচন দেশকে ভয়াবহ সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে’
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৩৭
ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, সরকারের একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটা দেশকে ভয়াবহ সংঘাতে নিয়ে যাবে। এই ভয়াবহ সংঘাত থেকে দেশ রক্ষা করতে পারে কেবল জাতীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১ ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে চলতি সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চজ) পদ্ধতির প্রবর্তন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা নিরসনের দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ সমাবেশ আয়োজন করে।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বর্তমান সরকার ফের ক্ষমতায় আসলে দেশের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে। ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস হবে, ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তি এদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে, ইসলামী শিক্ষা ভয়াবহ সংকটে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ ভয়াবহ সংঘাতের মুখে নিপতিত। তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করলে নির্বাচন কমিশনকে চরম খেসারত দিতে হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, চিকিৎসা বিভাগ, নির্বাচনী ব্যবস্থা, শিক্ষাঙ্গণসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে, এর বিকল্প নেই। জনগণ যেভাবে ফুঁসে উঠছে, তাতে সরকারের আখের রক্ষা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের কথা বলে জনগণের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশে এখন জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে না। জনগণ আজ তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ওয়াদা দিয়েছিলেন যে তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, তিনি জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি তারা দিনের ভোট রাতে বাক্সে ভরে নিজেদের ক্ষমকার চেয়ার পাকাপোক্ত করেছে। আজকে জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা এবং বিদেশী তাঁবেদার শক্তি দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। উন্নয়নের নামে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে।’
সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ৭ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ, ১৩ অক্টোবর ঢাকায় শ্রমিক সমাবেশ, ২০ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ছাত্র যুব-সমাবেশ এবং অক্টোবর ও নভেম্বরে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্ যায়ে সদস্য সম্মেলন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি পিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, যুবনেতা মাওলানা নেছার উদ্দীন, ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম রিয়াদ, নগর সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, নগরসহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মাওলানা নুরুল ইসলাম নাঈম, হাসমত আলী, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি সিরাজুল, ইসলাম, মুফতি মো. মাছউদুর রহমান, রাকিবুল ইসলাম ও মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস
