ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এজন্য সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলার নৌকার জেলেদের সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে লঘুচাপের কারণে সারাদেশে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একইসঙ্গে নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছে অধিদফতর।
রোববার (১ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করা সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে হয়ে বর্তমানে বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ফলে দেশের রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী এবং ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়।
আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, এই সময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ঢাকার বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার হতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে বিহার ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে নদনদীগুলোর জন্য সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর (পুনঃ) ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার তিন দিনের পূর্বাভাসের দ্বিতীয় সোমবারের (২ অক্টোবর) জন্য বলা হয়েছে, এদিন বৃষ্টিপাত খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবারের (৩ অক্টোবর) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আর বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।