সরকার খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়: ফখরুল
২ অক্টোবর ২০২৩ ২১:২৪
ঢাকা: বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তির ‘এক দফা’ দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল এ সমাবেশ আয়োজন করে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে পাঠানোর আবেদন আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নাকচের হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের মাতা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার, এই অনির্বাচিত গণবিরোধী সরকার হত্যা করতে চায়। তাকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ না দিয়ে মিথ্যা প্রতারণা করে জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘এরা আসলে কাপুরুষ, এরা ভীত। এরা জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি সুস্থ হয়ে যান, আবার জনগণের মাঝে ফিরে আসেন, তাহলে দেশনেত্রীর জন্য কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে তাদের তখতে তাউস ধ্বংস হয়ে যাবে।
ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য তারা (সরকার) বিভিন্ন রকম আইন কানুন দেখাচ্ছে। যখন আপনার (শেখ হাসিনার) কানের সমস্যা হয়েছিল, তখন আপনি আমেরিকা চলে গিয়েছিলে, যান নাই? আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন জীবন-মরণের সমস্যায়, তখন এইসব কথা বলছেন কেন? একটাই কারণ যে, রাজনৈতিকভাবেই তারা বেগম জিয়াকে হিংসা করে, তারা বেগম জিয়াকে সুস্থ করতে চায় না, তারা বেগম জিয়াকে রাজনীতি করতে দিচ্ছে না।
‘আওয়ামী লীগের লক্ষ্য একটাই যে, এ দেশে কোনো বিরোধীদল থাকবে না, এ দেশে তারাই সরকার চালাবে, তারাই সরকারে থাকবে। তাদের কথা-বার্তা শুনলে মনে হবে তারাই শুধু এদেশের মালিক আর আমরা সব প্রজা’- বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘পিটার হাসের ওপর তারা (সরকার) খুব রেগেছে। তাদের নেতা-মন্ত্রীরা সমস্ত ডিপ্লোমেটিক নর্মসকে উপেক্ষা করে তার বিরুদ্ধে যারপরনাই কথা-বার্তা বলছে। এমনকি তাদের বংশবদ যে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আছে, মিথ্যাচার করছে। এরা এতো দায়িত্বজ্ঞানহীন, যে দেশটাতে আমরা সবচেয়ে বেশি রফতানি পণ্য যায়, তাদের ওখানে সবচেয়ে বেশি গার্মেন্টস চায়, সেই দেশের সঙ্গে তারা সমস্যা তৈরি করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এই সেপ্টম্বর মাসে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স মানে আমাদের বিদেশে যে শ্রমিকরা কাজ করেন তারা যে টাকা পাঠায়। তার অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর তাদের আস্থা নাই। সেজন্য তারা অর্থ পাঠাচ্ছে না। এরকম অবস্থা করে রেখেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সামনে কেনো বিকল্প নাই। একটাই পথ। সরাসরি বলতে চাই এই অবৈধ সরকারকে এখনও সময় আছে মানে মানে পদত্যাগ করে একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিন, সংসদ বিলুপ্ত করুন, একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যদি সত্যিকার অর্থে দেশের ভালো চান, দেশের কল্যাণ চান এই ব্যবস্থায় আসুন। অন্যথায় দেশের মানুষ জানে কীভাবে স্বৈরাচারকে দূর করতে হয়।’
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামে সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন— বিএনপির শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের নাসির হায়দার, জামাল উদ্দিন খান মিলন, মামুনুর রশীদ খান, এসএম ফয়সাল, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, আনম খলিলুর রহমান, আসলাম মিয়া, সৈয়দ অলিউল্লাহ সিদ্দিকী, মোশাররফ হোসেন, মিজানুর রহমান লিটু, ওবায়দুল রহমান টিপু, ফজলে হুদা, শাহ আবদুল্লাহ বাকী, শাহ মো. মুনিরুর রহমান, মাহমুদা হাবিবা, দীপু হায়দার খান, ইউনুস আলী মোল্লা, সাহাদাত হোসেন বিপ্লব, আশরাফুল আরিফ ডন, কাজী হোসেন, শফিকুর রহমান মিঠু ও মীর হাসান কামাল তাপস প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস