এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল তারা!
৩ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২৪
সিরাজগঞ্জ: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে নিজেরদের পরিচয় দিচ্ছিল। আর এই পরিচয়ে আগামী সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জরিপে এগিয়ে রাখার লোভ দেখিয়ে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এই প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
গ্রেফতার তিন জন হলেন- নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার বিনোদপুর গ্রামের মো. দুলাল হোসেনের ছেলে ও চক্রের মূলহোতা মো. জাহাংগীর হোসেন (৩৬), একই থানার নুয়ারনই গ্রামের বাহার মিয়ার মেয়ে তাছলিমা খাতুন (৩২) ও একই জেলার বেগমগঞ্জ থানার মনপুরা গ্রামের আছান উল্লাহ’র ছেলে মো. ফয়জুল্লাহ (৩০)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দু’জনকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আরেকজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শাহজাদপুরের গ্র্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. জাহাংগীর হোসেনকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মানবাধিকারের একটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ। এরপর বাকি দু’জনকে গভীররাতে পাবনার ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহায়তায় পাবনার রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে থেকে আটক করে। এ সময় দু’জনের কাছে ৬৩ হাজার টাকা, একটি মোবাইল, একটি প্রিমিও প্রাইভেটকার ও আরেকটি মানবাধিকারের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোয়ন প্রত্যাশীদের কাছে জরিপের নামে অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে একটি প্রতারক চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনোয়ন প্রত্যাশী বিভিন্ন জনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করছে এবং জনমত জরিপে তাদের এগিয়ে রাখবে মর্মে টাকা দাবি করছে। এমন খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে ওই প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিত এবং অর্থনৈতিক সুবিধা চাইত। তারা নিজেদের কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি এবং মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিত। এ ছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০/১২ জন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণামূলক অর্থনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেফতার তিন জনের মধ্যে জাহাঙ্গীর ও তাসলিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকি জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/পিটিএম