আত্মপ্রকাশের দিনই মার খেলেন ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরা
৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:২৮
ঢাকা: আত্মপ্রকাশের দিনেই আহ্বায়ক আকতার হোসেনসহ হামলার শিকার হয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির অন্তত ১০ নেতাকর্মী। তাদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলার ঘটনায় আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মিশুক-মুনীর চত্বর এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরা। হামলার শিকার ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আকতার হোসেনের রক্তাক্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে ডাকসু সংগ্রহশালার সামনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠাকালীন নতুন কমিটি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামের সংগঠনটি।
ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরা জানান, ছাত্রলীগের হামলায় সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুল্লাহ আল গালিব, ঢাবি কমিটির সদস্য নিশিতা জামান নিহা, যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হাসান, সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সদস্য সুমনা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসাইবা তাসনিম সাবা, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল হান্নান মাসউদ ও সদস্য সাদিয়া ইয়াসমিন ঐতিহ্য আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ১০-১২ জনের মতো আহত হয়েছে। তবে আখতার ছাড়া কারও অবস্থা গুরুতর নয়। হামলা মূলত আখতারের উপরই হয়েছে।
এদিকে, গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতের অনুসারী জগন্নাথ হল শাখা ও মুহসিন হল শাখার কিছু নেতাকর্মীর নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
হামলা ঘটনায় আহত সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডের দিকে যাচ্ছিলাম। ওখানে হঠাৎ করে ছাত্রলীগের একটি দল এসে এলোপাথাড়ি হামলা করে। সেখানে আমি, আখতার ভাই এবং ফয়সাল (যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হাসান) ভাই ছিলাম। ওদের লক্ষ্য ছিল মূলত আখতার ভাই। ওরা এসেই আখতার ভাইয়ের মুখে, নাকে ঘুষি মারা শুরু করে। আমরা ওনাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হই। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের সংগঠনের আরও কিছু সদস্য পেছন থেকে আসছিলেন। তারা রক্ষা করতে এলে তাদের উপরও হামলা করা হয়।’
ছাত্রশক্তির ঢাবি শাখার সদস্য সাদিয়া ইসলাম ঐতিহ্য বলেন, ‘আমরা রিকশায় ছিলাম। আমরা যখন দেখলাম ভাইকে মারছে, তখন রিকশা থেকে নেমে তাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু হামলাকারীরা আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ভাইয়ের ওপর হামলা করে। আমরা ভাইকে রক্ষা করতে পারিনি। ভাই হেঁটে যাচ্ছিলেন, বৃষ্টির কারণে আমরা রিকশায় উঠেছিলাম।
তবে হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের যোগসূত্র নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলে তো তাদের সংবাদ সম্মেলনেই বাধা দিতে পারতাম। আজকে সকাল থেকেই নেতাকর্মীসহ আমরা মধুর ক্যান্টিনে অবস্থান করছিলাম। সংবাদ সম্মেলন করার জন্য আখতার আমার সাহায্য চেয়েছে। তারা কেন এখন আমাদের দোষারোপ করছে জানি না। ওদের মারার পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। বরং ওরা নুরের কাছ থেকে বেইমানির শিকার হয়ে নতুন দল করেছে। ওদের প্রতিষ্ঠার পেছনেও কারও রাজনৈতিক স্বার্থ আছে।’
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম