সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সর্তক সংকেত, চট্টগ্রামে ভূমিধসের শঙ্কা
৫ অক্টোবর ২০২৩ ২২:১৯
ঢাকা: বুধবার রাত থেকে অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে রাজধানীতে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালের দিকে আকাশ মেঘলা থাকলেও দুপুরের পর থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যা রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় রাজধানীর কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ সক্রিয় থাকায় সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়ার এই পরিস্থিতিতে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ে ভূমিধসেরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার ( ৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, এ সময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
তিনি আরও জানান, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়ার এ পরিস্থিতিতে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে— সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর (পুনঃ) ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য পূর্বাভাসে রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারিপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর (পুনঃ) ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরেক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে— সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১২ টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (৮৯ মি.মি. বা তারও বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধ্স হতে পারে ।
এদিকে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে— ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু’ এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময় সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
যদিও বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনের আবহাওয়ার অবস্থা বলছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে আর রাজধানী ঢাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সারাবাংলা/জেআর/একে