চিলমারী-রৌমারি নৌপথে চলছে ফেরি, বাণিজ্যে উন্নতির আশা
৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১২
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী-রৌমারী নৌ পথে ফেরি কুঞ্জলতা উদ্বোধনের পর ১২ দিনের মাথায় যুক্ত হয়েছে আরও একটি ফেরি ‘বেগম সুফিয়া কামাল’। এতে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি ঘটবে বলে আশা স্থানীয়দের। ফেরি চালুর ফলে পণ্যবাহী যানবাহনসহ যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আরও ফেরি চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
এই রুটে ফেরি উদ্বোধনের পর থেকেই প্রতিদিন পাথরসহ পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্য যানবাহনের পাশাপাশি ফেরিতে যাতায়াত করছেন যাত্রীরাও। ঢাকার সঙ্গে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরুত্ব ও খরচ কমাতে নৌ রুটের এ পথকে বেছে নিচ্ছেন গাড়ির চালকরা। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় যাতায়াতের চেয়ে ফেরিতে যাতায়াত নিরাপদ হওয়ায় স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করছেন সাধারণ যাত্রীরাও। শুকনো মৌসুমেও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীতে পানি ধরে রেখে ফেরি চলাচল অব্যাহত রাখার দাবি তাদের।
জানা গেছে, জেলার চিলমারী উপজেলা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারি ও রাজিবপুর উপজেলার সঙ্গে নদী পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতেন দুই উপজেলাসহ জেলার অন্য উপজেলার মানুষজন। এতে প্রতি যাত্রীকে নৌকায় যেতে খরচ পড়ত ১২০ টাকা আর মোটরসাইকেলসহ গুণতে হতো ৩৮০ টাকা পর্যন্ত।
ফেরি চালুর পর বর্তমানে যাত্রী প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা, মোটরসাইকেলসহ ১০০ টাকা, মাইক্রো-জিপ ও কার প্রতি ১৪০০ টাকা এবং পণ্যবোঝাই ট্রাক ওজন অনুযায়ী ১৯০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এতে নিরাপদ যাত্রায় সুবিধা পাচ্ছেন যাত্রী, পণ্যবাহী ট্রাকের ড্রাইভার-মালিকরা।
চিলমারী ঘাটে ফেরিতে পারাপারের জন্য অপেক্ষারত পাথরবোঝাই ট্রাকের ড্রাইভার আবুল হোসেন বলেন, ‘এই পথে গেলে ট্রাক মালিকের প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ কম পড়ে। এজন্য এদিক দিয়ে ফেরিতে গাড়ি পার করে যাতায়াত করছি। কিন্তু ফেরির সংখ্যা কম থাকায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। ফেরি আরও বেশি হলে এই পথে যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে এবং আমরাও স্বাচ্ছ্যন্দে যাতায়াত করতে পারবো।’
ফেরির যাত্রী রৌমারী উপজেলার বাসিন্দা সুজা বলেন, ‘আমরা আগে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতাম। পাশাপাশি খরচও বেশি হতো। এখন খরচ কমেছে এবং আমরা নিরাপদে জেলা শহরের যাতায়াত করতে পারছি।’
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নিযুক্ত বিআইডব্লিউটিসি’র ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, ‘এই রুটটি উত্তারাঞ্চল থেকে ময়মনসিংহ, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পণ্য পরিবহনে সহজ হওয়ায় যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। এই চাপ কমাতে দু’টি ফেরি চলাচলের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।’ তবে শুকনো মৌসুমে ডেজিংয়ের মাধ্যমে পানি ধরে রাখতে পারলে এই রুটটি উত্তারাঞ্চল তথা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিআইডাব্লিউটিসি’র এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর এই নৌ রুটে কুঞ্জলতা নামের একটি ফেরি চলাচলের উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়াও গ ২ অক্টোবর এই নৌরুটে যুক্ত করা হয় আরেকটি ফেরি ‘বেগম সুফিয়া কামাল’।
সারাবাংলা/এমও