Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উন্নয়নের রোল মডেল, এটি বাতাসে হয়নি: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:১৯

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগে বাংলাদেশ শুনলে সবাই নাক সিঁটকাত। এখন সিঁটকায় না। বাংলাদেশ শুনলে একটি আলাদা মর্যাদা নিয়ে তাকায়। উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছি। এটি মাথায় রাখতে হবে। এটি বাতাসে হয়নি। এটি আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে আমরা দেশের উন্নতি করেছি।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

রিজার্ভ কমতির দিকে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় আমদানি বন্ধ ছিল রফতানি বন্ধ ছিল। যোগাযোগ বন্ধ ছিল। যাতায়াত বন্ধ ছিল সবকিছু বন্ধ ছিল। যার জন্য আমাদের রিজার্ভ বেড়েছিল। এরপর যখন অর্থনীতি খুলে গেল আমাদের সমস্ত জিনিস যখন আমদানি শুরু হলো স্বাভাবিকভাবে আমাদের রিজার্ভ কমবে এটি খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।’

‘আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি তার আগে তো অনেক আঁতেলরাই ক্ষমতায় ছিল। জ্ঞানী-গুণীরাই ছিল, রিজার্ভ কত ছিল তখন? এক বিলিয়নও ছিল না। জিরো পয়েন্ট ৭৭ বিলিয়ন ছিল বলে’ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘আমি যখন ১৯৯৬ সাল সরকার গঠন করি রিজার্ভ কত ছিল প্রশ্ন তুলে তিনি আরও বলেন, যেটুকু বাড়াইছে আমাদের সরকারের আমলেই আমরা করেছি। যদি বলেন যে রিজার্ভ রক্ষা করতে হবে। তাহলে আমি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেই? পানি দেওয়া বন্ধ করে দেই? সার বন্ধ করে দেই? পানি দেওয়া বন্ধ করে তাহলে আমাার রিজার্ভ ভালো থাকবে। রিজার্ভটা বেশি রাখা প্রয়োজন, না আমার দেশের মানুষের কমফোর্টনেস, মানুষের ভালোমন্দ কাজ করা প্রয়োজন? ২শ ডলারে যে গম কিনতাম ৬শ ডলারে কিনতে হচ্ছে। আটশ ডলারে যে পরিবহন খরচ সেটি ৩/৪ হাজার ডলার লাগছে। তারপরও তো পাওয়া যাচ্ছে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে। হ্যাঁ, আমি তো বলেছি ঠিক আছে যদি এতো বেশি কথা হয়… যখন সরকার গঠন করেছিলাম তখন যত ছিল ওইখানে এনে রেখে আবার ইলেকশন করব। করে আবার বাড়াব। কিন্তু ওইখানে নিয়ে দেখাব, ওই ছিল বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ শতভাগ দেই। কমাইয়া ২৮ ভাগে নিয়ে আসব। সবাই একটু টের পাক কি ছিল? আমরা তো ভুলে যাই।’

যেটি অবশ্য বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে বলেছিলাম প্রতিদিন যেন একটু কিছুটা লোডশেডিং দেয়। তাহলে মানুষের মনে থাকবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পয়সা দিয়ে তেল কিনে জেনারেটর চালাতে হবে। তখন আবার আক্কেলটা ঠিক হবে। হ্যাঁ এই অবস্থা তো ছিল। কারণ এখন তো আমরা করে দিচ্ছি। ভতুর্কি দিচ্ছি। কেন আমি ভতুর্কি দেব? বিদ্যুৎ ব্যবহার করতেছে সবাই। আর ভতুর্কির সুযোগটা নিচ্ছে সব অর্থশালী বড়লোকরা। সেখানে একটি স্লট ঠিক করব এখন থেকে। কত পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে তার একদাম। আর তার থেকে বেশি ব্যবহার যারা করবে তাদের জন্য আলাদা দাম। যারা বেশি ব্যবহার করবে তাকে বেশি দামে কিনতে হবে। সেইভাবে একটি ব্যবস্থা করার জন্য এরইমধ্যে একটি নির্দেশ দিয়েছি। এটার ওপরে কাজ চলছে, এটি আমরা করে দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব। ইলেকশনের পরে যদি আসতে পারি আবার করব। দেখি কে সাহস পায় ক্ষমতা নিতে। এটিই আমার কথা। সব গোছগাছ করে দেওয়ার পরে এখন ইলেকশনের কথা ভোটের কথা, অর্থনীতির কথা পাকাপাকা কথা শুনতে হয়। আমি শুনতে রাজি না। আমি এই দেশে আজকের না। ৭৭ বছর বয়স। সেই ১৫/১৬ বছর বয়স থেকে মিছিল করি। তাহলে আমার রাজনীতির বয়স কত? স্কুলজীবন থেকে মিছিল করা শুরু করছি। এই পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। আর বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি। হারানোর কিছু নেই আমার। এখানে আমি কিছু পেতেও আসিনি নিতেও আসিনি। আমি আসছি আমার দেশের মানুষকে দিতে। কারণ আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করে এই দেশ স্বাধীন করে গেছেন। তার যে স্বপ্নটা ছিল সেটি পূরণ করাই আমার কথা। সেইজন্য এই দেশের দরিদ্র সাধারণ মানুষ তাদের জন্যই আমার কাজ। আমি সেটিই করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন তো কেউ আর না খেয়ে কষ্ট পায় না। যে উত্তরবঙ্গে একবেলা খাবার পেত না তিনবেলা চার বেলাও তো ভাত খায়। মানুষের খাবার গ্রহণটাও তো বেড়ে গেছে। আর আমাদের উৎপাদনও বাড়ছে। আমরা উৎপাদন বাড়াচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ১৬ দিনের সফর শেষে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীসহ সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট (বিজি-২০৮)।’

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান তিনি। সেখানে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শেখ হাসিনা বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবর্ধনায় যোগ দেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪২ মিনিটে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/একে

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর