ফের অগ্নিসন্ত্রাস করলে জনগণ ঠান্ডা করে দেবে: প্রধানমন্ত্রী
৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যদি মানুষের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টায় কেউ ওইরকম অগ্নিসন্ত্রাস, ওই ধরনের কিছু যদি করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে তো জনগণ আছে। আমার কিছু করার লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। কারণ যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন কিন্তু সাধারণ মানুষেই ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। এবারও তাই হবে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
ঢাকায় বিএনপির টানা কর্মসূচির কারণে শারদীয় দুর্গাপূজায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার-টরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। এই ধরনের কেউ কথা বলছে আমার তো মনে পড়ে না। কেউ জিজ্ঞাসাও করেনি।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিজ্ঞতা ২০০৭ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত হয়ে গেছে আমাদের। তারপর আবার কেউ চায়, চাইতে পারে। আর এই ব্যবস্থা নষ্ট তো বিএনপিই করেছে। এই সিস্টেম তো বিএনপিই নষ্ট করে দিয়েছে। কাজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি।’
‘আর তাদের যে আন্দোলন আমরা তো আন্দোলনে বাধা দিচ্ছি না। তারা তো আন্দোলন করে যাচ্ছে। লোকসমাগম করে যাচ্ছে। খুব ভালো কথা। এতকাল চুরিচামারি করে যত পয়সা বানিয়েছিল আর যত টাকা মানি লন্ডারিং করেছিল সেগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের হাতে কিছু টাকা যাচ্ছে। আমি কিন্তু ওইভাবেই বিবেচনা করি। তারা যত আন্দোলন করবে সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। মানুষ যদি কিছু পায় এই দুঃসময়ে তো ভালো। কাজেই এই টাকাগুলোও বের হোক। যে টাকা বের হচ্ছে তা মানুষ পাচ্ছে। সে জন্য আমি বলছি, কোনো কিছু বলার দরকার নেই।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছি, যদি মানুষের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে; ওইরকম অগ্নিসন্ত্রাস, ওই ধরনের কিছু যদি করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে। আমার কিছু করা লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। কারণ যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন কিন্তু সাধারণ মানুষেই ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। এবারও তাই হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাংবাদিকদের অনুরোধ করব; এই যে তাদের সোর্স অব মানিটা; এটা কোথা থেকে? সেটি একটু খবর নেওয়া দরকার। তারা এত টাকা কোথা থেকে পায় এবং এত টাকা কীভাবে খরচ করে? আমাদের তো নিজের খেয়ে নৌকা। কিন্তু তাদের তো সেটি না। তাহলে তারা পাচ্ছে কোথা থেকে।’
পূজায় অবশ্যই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এটিও অনুরোধ করেছি যেখানে-সেখানে পুজোমণ্ডপ না করার। কোলকাতায় এত বেশি জনসংখ্যা সেখানে কয়টা পূজামণ্ডপ হয়? সেই হিসাবে বাংলাদেশে তার থেকে অনেক বেশি মণ্ডপ হয়। তারপরও আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সচেতন আছে। কারণ আমাদের দেশ সব ধর্মের মানুষের সমানভাবে এখানে বসবাস করে। সকলের উৎসব সকলে যোগ দেয়। আমদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিটা আছে, এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা যদি দুর্গাপূজার দিকে কোনো দৃষ্টি না দেয়, তারপরও যদি আন্দোলন করতে থাকে করুক। তারা তো শুধু তারিখ দিচ্ছে অমুক তারিখে ফেলে দেবে, তমুক তারিখে ফেলে দেবে। দিতে থাক অসুবিধা নেই। আন্দোলনটা থাকলে মানুষের আমার পার্টিও ভালো থাকে। তখন তারা আবার নেমে পড়ে। মাঝখানে একটু ঢিলা দিয়েছিল, এখন তো এমপি সাহেবরাও এলাকায় দৌড়াচ্ছে। আমি তো আবার এলাকায়ও খোঁজ-খবর নিই। এখন দেখি দল আবার ভালোর দিকে এগুচ্ছে। এটি তো মানুষের জন্য ভালো।’
তবে পূজার সময় কেউ যেন কোনোরকম অপকর্ম করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
সারাবাংলা/এনআর/একে