‘রাস্তায় ঘেউ ঘেউ করলেই বিদেশে বিরোধী দল হিসেবে গণ্য করে না’
৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০০
ঢাকা: বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে ওয়েস্ট মিনিস্টার টাইপে বিশ্বাস করি। ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে গণতান্ত্রিক ধারায় বিরোধী দলের যাদের আসন আছে সংসদ সদস্য আছে সেটাই হচ্ছে বিরোধী দল। আর রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেড়াল সেটি কিন্তু বিদেশে কখনো বিরোধী দল হিসেবে ধরে না। এটি সকলের মনে রাখা উচিত।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
শতভাগ বিদ্যুৎসহ সরকারে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতগুলো টেলিভিশন খুলে দিয়েছি। টকশোতে যে যা পারছেন, টক কথা মিষ্টি কথা বলে যাচ্ছেন। খুব বলেন, কোনো আপত্তি নেই। যে যার মতো। কিন্তু সারা দিন কথা বলার পর যদি বলে আমাদের কথা বলতে দেয় না। আর বিএনপির তো মাইক একটা লাগানো থাকে। আর আমরা নাকি তাদের মিটিং মিছিল করতে দিই না। যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, আমাদের সঙ্গে কী আচরণটা করত? আমরা যদি তার একটা কণাও করতাম তাহলে তো ওদের অস্তিত্বই থাকতো না, থাকবে অস্তিত্ব? থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো ওদেরকে খুলে দিয়েছি, তোমাদের যা খুশি করো। নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করে আসো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতে হবে বা বিরোধী দল থাকতে হবে। কিন্তু বিরোধী দল কে? যাদের পার্লামেন্টে একটি সিট নাই, তাকে বিরোধী দল হিসাব করে তো রাখা যায় না, বলা যায় না। যার নির্বাচন করার মতো সাহস নেই। যারা নির্বাচন করে পার্লামেন্টে আসতে পারে না তারা আবার বিরোধী দল কীসের? আমরা ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে ওয়েস্ট মিনিস্টার টাইপে বিশ্বাস করি। ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে গণতান্ত্রিক ধারায় বিরোধী দলের যাদের আসন আছে সংসদ সদস্য আছে সেটিই হচ্ছে বিরোধী দল। আর রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেরাল সেটি কিন্তু বিদেশে কখনো ওই বিরোধী দল হিসাবে ধরে না। এটি সবার মনে রাখা উচিত। কারণ যারা বলে বেড়াচ্ছে বলতে থাকুক। কোনো অসুবিধা নেই।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ায় যুদ্ধ, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেল। পরিবহন খরচ বেড়ে গেল। আমরা তো তাও খেয়ে-পরে আছি। আপনারা যান না, আমেরিকায় যান, ইংল্যান্ডে যান, বিভিন্ন জায়গায় যান সেখানকার মানুষের কী অবস্থা! ওই একটা টমেটো কয়শ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। একটা রুটি কত দিয়ে কিনতে হয়। সেখানে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। বেশি জিনিস কিনতে পারবে না। ওয়াশিংটনে তো বাজার-টাজার করে আমরা রান্না করে খেয়ে আসছি এক পিস মাছ কিনতে বা দুই টুকরো মুরগি কিনতে কত শত টাকা খরচ হয় সেটা তো আমরা নিজে দেখে আসছি। কিন্তু আমরা মানুষের পাশে আছি যেন মানুষের কষ্ট না হয়।’
পাঙ্গাস মাছ খাওয়া নিয়ে কোনো একজনের বক্তব্যের উদ্ধৃতি টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন বলে দিলেন পাঙ্গাস মাছ খেতে পারেন না। আমি যদি জিজ্ঞাসা করি ২০০৯ সালের আগে কত পাঙ্গাস মাছ খেতেন। ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে মাছের উপর গবেষণা শুরু করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যেখানে আগে নুনভাত পেত না, এখন অন্তত পাঙ্গাস মাছের কথা চিন্তা করে। এই মাছ আগে বরিশাল আর যমুনা নদীতে পাওয়া যেত। সারা দেশে পাওয়া যেত না। গবেষণার মাধ্যমে এখন চাষ হয় এবং সারা দেশে পাওয়া যায়। যেখানে মানুষ নুনভাতের জন্য হাহাকার করতো। নুনভাত চাইত সেখানে মানুষ মাছ মাংস ডিম খাওয়ার জন্য চিন্তা করতে পারে। এইটুকু মানুষের জন্য করতে পারছি, আমি ওইভাবে দেখি। যারা আসে ফ্যান চাইত, নুনভাত চাইত তারা এসে আমাদের যতটুকু সাধ্য ছিল সেটি করে দিয়েছি।’
সারাবাংলা/এনআর/একে