Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ম্রো’দের জীবনচিত্র নিয়ে প্রকাশ হলো ছবিবই ‘মাংসি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ অক্টোবর ২০২৩ ০১:১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ম্রো সমাজের জীবনচিত্র ও বান্দরবানের নিসর্গ নিয়ে শিল্পী ও আলোকচিত্রী মইনুল আলমের ছবিবই ‘মাংসি’ প্রকাশ পেয়েছে। এতে স্থান পেয়েছে ২১০টি দুর্লভ আলোকচিত্র।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছবিবই ‘মাংসি’ নিয়ে নগরীর খুলশীর চিত্রভাষা গ্যালারিতে আড্ডা-আলোচনায় জড়ো হয়েছিলেন একদল কবি, লেখক-শিল্পী।

ম্রো সমাজের প্রান্তিক জনজীবনকে ২৭ বছর ধরে ক্যামেরাবন্দি করা শিল্পী-আলোকচিত্রী মইনুল আলমের ছবিগুলো এক সূতোয় বেঁধেছে সৃজনশীল প্রকাশনী ‘পূর্বস্বর’। ম্রো সমাজের ছেলেমেয়েরা তাদের যেকোনো উৎসবের আগে রাংসি (লাল রং) ও মাংসি (সবুজ রং) লাগায়। শিল্পী মইনুল ‘মাংসি’ শব্দটিকে ধার করেছেন তার ছবিবইয়ের নাম হিসেবে।

রঙিন আলোকচিত্রে শোভিত মাংসি’তে ম্রোদের নিত্যদিনের জীবনচর্যা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজগোজ, দূরের পথে দল বেঁধে পায়ে হেঁটে বা নৌকায় হাটে যাওয়া, মাতামুহুরী নদীতীরে সামান্য ভাতমাছ রান্না করে খাওয়া-দাওয়া, ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি, উৎসব-নানা শ্রেণি ও বিষয়ের ছবি ধারাবাহিকভাবে এসেছে পাতায় পাতায়।

মাংসি নিয়ে আলোচনায় অতিথিরা বলেছেন, সমাজের প্রান্তিক জনজীবনই শিল্পী মইনুল আলমকে আকৃষ্ট করেছে শুরু থেকে এবং তা কতটা গভীরভাবে, সেটাই এই নামকরণের মধ্যে প্রতিফলিত।

আড্ডায় ছিলেন আলোকচিত্রী আবীর আবদুল্লাহ, লেখক-গবেষক পাভেল পার্থ এবং লেখক ইয়াংঙান ম্রো। শুরুতে ভিডিওচিত্রে দেখানো হয় ‘মাংসি’ বইটির ছবি ও পেছনের গল্প।

অতিথি বক্তা ইয়াংঙান ম্রো বলেন, ‘মইনুল আলমের মাংসির মাধ্যমে আমি আমার শৈশবে ফিরে যাই। এ বইয়ের মাধ্যমে ম্রো ছেলে-মেয়েরা তাদের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে আদি-তথ্য পাবেন, যা হয়তো তারা জানতেনই না। বইতে এমন সব গল্প আছে যা এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিজেদের ভাষা পড়ার-জানার যে গুরুত্ব তা হয়তো এখন ম্রো’রা বুঝতে পারবে।’

আলোকচিত্রী আবীর আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এখন তিনটি প্রজন্ম আমরা দেখতে পাচ্ছি, যারা ভিন্নভাবে তাদের গল্প বলবে। আলোকচিত্র ভীষণভাবে শক্তিশালী, এটি আমাদের সমগ্র পরিস্থিতির ডকুমেন্টেশন করে। মাংসি এমনই একটি বই যার মূল্য হয়তো এখন আমরা দিতে পারব না। কিন্তু দীর্ঘসময় পর গিয়ে এ বইটি নিয়ে গবেষণা হবে। মাংসির পেছনে মইনুল আলমের ২৭ বছরের যে পরিশ্রম তা আসলেই বিশাল।’

লেখক-গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ‘মানুষের গল্প বলার ক্ষমতাই তাকে আলাদা করে তোলে। আলোকচিত্রীদের এই ক্ষমতা প্রবল। মইনুল আলম তার মাংসি বইয়ের মাধ্যমে আমাদের সেই গল্পই দারুণভাবে বলেছেন। বইটি যতটা স্বচ্ছ, ততটাই রাজনৈতিক। বইয়ে যে সিনচো’র (ম্রোদের বাঁশি) ছবি আছে তা এখন বিলুপ্তপ্রায়। আমরা ম্রোদের জাতি নিয়ে জানব, কেননা ম্রোদের জানা মানেই নিজেদের জানা। নিজেদের গল্প, ইতিহাস খুঁজে পেতে মাংসি বিরাট ভূমিকা রাখবে।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

আলোকচিত্রী মইনুল আলম ছবিবই মাংসি ম্রো’দের জীবনচিত্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর