‘ভিসা নীতিতে হবে? যা করার আমাদের করতে হবে’
৭ অক্টোবর ২০২৩ ২১:১৮
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা আমাদের বুকের উপর চেপে বসে ছড়ি ঘুরাচ্ছে, মারছে, খুন করছে, হত্যা করছে, লুণ্ঠন করছে, তাদের সরানোর দায়িত্ব কার? এই স্যাংশনের ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে, ভিসানীতির ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে? অন্য কেউ করে দিয়ে যাবে? যা করার আমাদেরকেই করতে হবে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক শিক্ষক মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোট এ মহাসম্মেলন আয়োজন করে। এতে সারাদেশ থেকে সহাস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নেতা অংশ নেন।
সরকার পতনে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি, পদযাত্রা করছি, রোড মার্চ করছি, সমাবেশ করছি, তাই না? তারা শুনছে? চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। এই জন্য এখন শোনাতে হবে এবং শোনানোর জন্য যা কিছু করা দরকার তাই করতে হবে। সেজন্য সমগ্র জাতিকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভয়াবহ দানব সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য, এ সরকারকে সরাতে রাজপথে সোচ্চার হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি এখনও বলি, এখনও আহ্বান জানাচ্ছি, অনেক কষ্ট দিয়েছেন মানুষকে, অনেক হত্যা করেছেন, অনেক স্ত্রীকে স্বামীহারা করেছেন, অনেক মাকে পুত্রহারা করেছেন, অনেক সন্তানকে পিতা হারা করেছেন, অনেক রক্ত ঝরিয়েছেন। এখনও সময় আছে এখন আপনি মানে মানে বিদায় হোন।’
‘আপনারা যে অপকর্ম করেছেন, এই অপকর্মের জবাবদিহি আপনাদের এক সময় করতে হবে। তার আগে সসন্মানে যদি বিদায় হতে চান তাহলে এখনই সময়, আপনি বিদায় হোন। আমরা বলেছি, পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং স্পষ্ট করে বলেছি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন’— বলেন মির্জা ফখরুল।
‘বিদেশিরা কেউ বলেনি কেয়ারটেকার সরকারের কথা’— সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা বলতে হয় না, বুঝা যায় যে এখানে (বাংলাদেশে) নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীন ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তার প্রমাণ দিয়েছ ’১৪ সালে, তার প্রমাণ দিয়েছ ’১৮ সালে আর এখনও প্রমাণ দিচ্ছ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এত কথা আমি বুঝতে পারি না। নির্বাচন তো আমরা করছি সুন্দর নির্বাচন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। এখন এই কথাগুলো শুনলে ঘোড়াও হাসে। উনারা সুষ্ঠু নির্বাচন করেন- এটা বিস্ময়কর ব্যাপার। অবৈধভাবে হোক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো। ১৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী আছেন। উনি কি একবারও চিন্তা করেন না যে, উনার এই কথা শুনে মানুষ হাসবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভিসা নীতিতে এখন সবাই আতঙ্কিত। ওদের যারা দুর্নীতি করেছে, যারা অন্যায় করেছে, যারা বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড করেছে, যারা বিচারক হয়ে দলীয়ভাবে বিচার করছে, যে ব্যবসায়ী চুরি করছে, দুর্নীতি করছে সবাই এখন আতঙ্কিত হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ছাপ আমরা দেখতে পারছি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুখে।’
তিনি বলেন, ‘এসব ডিগবাজিতে কোনো লাভ হবে না। ডিগবাজি করে একবার বাইরে যাচ্ছে, ওদিকে যাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, রাজনৈতিকভাবে আপনার সময় হয়ে গেছে। দয়া করে মানে মানে কেটে পড়েন। তা না হলে জনগণ আপনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে।’
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ও শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম