রিজার্ভ নিয়ে আমরা চিন্তিত, তবে শঙ্কিত নই: ফরাসউদ্দিন
৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৩২
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, রিজার্ভ নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে তা অন্যায়। রিজার্ভ নিয়ে আমরা চিন্তিত তবে শঙ্কিত নই। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখনও সবল আছে। অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তান, শ্রীলংকাকে পেছনে ফেলে আমরা এখন ভারতের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছি।
রোববার (৮ অক্টোবর) ঢাকার এফডিসিতে অর্থনৈতিক সুরক্ষায় অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।
ফরাসউদ্দিন বলেন, ঋণ খেলাপিরা একবার দুই বার নয়, বার বার কেন তারা পার পেয়ে যাবে। কেন ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করবে না। এক হাজার টাকার কৃষি ঋণ ফেরত দিতে না পারলে কেন বঙ্গবন্ধুর আপনজন কৃষাণ-কৃষাণীদের জেলে যেতে হয়। অথচ দশ হাজার, বিশ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপিরা এক দলের নয়, সব দলের সরকার প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধানদের ডানে বামে বসে বিদেশ ভ্রমণ করে, এটা আমার হিসেবে মেলে না।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থীতিশীলতা বজায় রেখে সমঝোতা করা উচিৎ। রাজনৈতিক বিরোধের মিমাংসা না করে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিলে আমাদের ভবিষ্যৎ খারাপ হবে। জাতীয় সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সাংসদই ব্যবসায়ী। যারা নিজের স্বার্থে আইন প্রণয়ন করে। তাই রাজনীতিবিদদের আরো শক্তিশালী করে দেশের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আইএমএফের ঋণ নিয়ে আমরা যদি আর্থিকখাতের সংস্কার করতে না পারি তাহলে সে ঋণ নিয়ে লাভ কি। দেশের আড়াই কোটি লোকের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ডলার। অথচ কর দিচ্ছে মাত্র ২৮ লক্ষ লোক। গ্রামে গঞ্জে অনেক ব্যক্তি আছে যারা কর প্রদানে সক্ষম, তাদেরকেও করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তবে কর আদায়ে রক্তচক্ষু দেখানো যাবে না। গত ৫২ বছরে আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রসর অবিশ্বাস্য হলেও আমাদের অনেক সমস্যা আছে। কিছু চাটার দলও আছে। যে কারণে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কর দেওয়ার প্রবণতা কম। প্রভাবশালীদেরই কর ফাঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাবে প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে বৈদেশিক সাহায্য নির্ভরতা, আর্থিক খাতের অনিয়ম, প্রবাসী আয়ে ধীর গতি, মেগা প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্ণীতি ও অর্থ পাচারের কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী করতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই দুর্নীতি অনিয়ম প্রতিরোধ করে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুরক্ষার কৌশল অবলম্বন করা উচিৎ।
উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, জাকির হোসেন, মো: আলমগীর হোসেন, শাহ আলম খান। অর্থনৈতিক সুরক্ষায় অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিই উত্তম কৌশল নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
সারাবাংলা/জিএস/এনইউ