গাইবান্ধা-৩: প্রয়াত এমপি ইউনুসপুত্রের সমর্থন আজিজুরকে
৮ অক্টোবর ২০২৩ ১১:১৯
গাইবান্ধা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন আসনে সংসদ সদস্য হতে আগ্রহীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী) আসনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দৌড়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত ডা. ইউনুস আলীর ছেলে ড. ফয়সাল ইউনুস এই নির্বাচনে প্রার্থীদের হতে আগ্রহীদের মধ্যে সমর্থন জানিয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুর রহমান সরকারকে।
সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় ড. ফয়সাল তার এই অবস্থানের কথা জানান। গাইবান্ধার এই আসনটিতে ছয় ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির ফজলে রাব্বি চৌধুরী। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পান আওয়ামী লীগ নেতা ডা. ইউনুস। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যু হলে উম্মে কুলসুম স্মৃতি উপনির্বাচনে জয় পান।
এই আসন থেকে এবারও নৌকার প্রার্থী হতে চান উম্মে কুলসুম স্মৃতি। এ ছাড়া আলোচনায় আছেন গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মো. আজিজুর রহমান সরকার, পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎসহ অন্যরা।
প্রার্থী হতে আগ্রহীদের মধ্যে আজিজুর রহমান সরকার ছাত্রজীবন থেকেই যুক্ত ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থীর কর্মদক্ষতা ও কাজের আগ্রহের কারণে প্রয়াত ডা. ইউনুস আলীর ছেলে ড. ফয়সাল ইউনুস তাকেই সমর্থন জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় ড. ফয়সাল ইউনুস বলেন, আমার বাবার ধ্যান-জ্ঞান ছিল এই জনপদের উন্নয়ন। আপনারাও তাকে ভালোবেসে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন। আমার বাবা আজ নেই। কিন্তু তিনি জীবিত অবস্থায় প্রায়ই তার উত্তরসূরী হিসেবে আজিজুর রহমান সরকারের কথা বলতেন। আওয়ামী লীগ অন্তঃপ্রাণ ও এলাকার জন্য নিবেদিত আজিজুর ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত দলের নীতি ও মূল্যবোধের প্রতি তার অঙ্গীকার প্রশংসনীয়। একজন তরুণ ও যুবনেতা হিসেবে তিনি আমাদের নির্বাচনি এলাকার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কর্মপরিকল্পনা সাজাতে সমর্থ হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
নির্বাচনি এলাকার আপামর জনসাধারণের উদ্দেশে ড. ফয়সাল বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আপনারা যেভাবে আমার বাবাকে (ডা. ইউনুস আলী) সমর্থন দিয়েছিলেন, সেভাবেই আপনাদের এবার আজিজুর রহমান সরকারের পাশে থাকতে হবে। আপনারা বরাবরই আমাদের পরিবারের পাশে থেকেছেন। আশা করি, এবারও আমাদের পরিবারের এই অনুরোধটুকু রাখবেন। আমাদের নিরাশ করবেন না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনে সব মহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ কথা উল্লেখ করে ড. ফয়সাল বলেন, আপনারা অনেকেই বলে থাকেন, আমার বাবার অনেক কাজই অসমাপ্ত রয়ে গেছে। আজিজুর রহমান সরকার সবসময় সুখ-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার মতো একজন তরুণ ও উদ্যমী ব্যক্তিই সেসব অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারবেন। আপনাদের সমর্থন পেলে মনোনয়ন শুধু নয়, আমার দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা, আজিজুর রহমান সরকারকে যেন আমরা মহান জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে পাই।
আজিজুর রহমান সরকারের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামে। বাবা আব্দুল মান্নান সরকার, মা মনোয়ারা বেগম। ছাত্রলীগের রাজনীতি পেরিয়ে তিনি এখন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক। স্থানীয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও তিনি বিভিন্ন মহলে সমাদৃত। এবারের নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে আগ্রহী আজিজুরের পক্ষে এরই মধ্যে কর্মীরা কাজ শুরু করেছেন।
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, আজিজুর বর্তমানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন। তুলে ধরছেন সরকারের সফলতা ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের চিত্র। উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেই তিনি সমান সক্রিয়।
জানতে চাইলে আজিজুর রহমান সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে, আপদ-বিপদে পাশে আছি। তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা শেষ করেছি। এখন এলাকার মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চাই। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন চাইব। এ জন্য এলাকার মানুষ ও আমার রাজনৈতিক অভিভাবকদের সহযোগিতা কামনা করছি।
সারাবাংলা/টিআর