Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়— মার্কিনীদের বিএনপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৩০

ঢাকা: ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

সোমবার (৯ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশেই প্রশ্নবিদ্ধ নয়, সারাবিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের মানুষ যেভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তেমনি সারা বিশ্বও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কিন্তু, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই; যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়নও বলেছে।’

‘আমরা স্বাভাবিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। পরিস্থিতির তো কোনো উন্নতী হয়নি বরং আরও অবনতি হয়েছে। গত কয়েকটি নির্বাচন তারা ভোটাধিকার হরণ করেছে। এখন ভোট চুরির প্রকল্প আরও শক্তিশালী হয়েছে। দমন নিপীড়ন আরও বেড়েছে’— বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ভোট চুরিকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। বিচার বিভাগ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, লুটেরা, ব্যাবসায়ী মিলে একটি ভোট চুরির প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আবারও তারা ভোট চুরি প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছে। এগুলো থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় এক দফা দাবি। এই এক দফা দাবি প্রতিষ্ঠা করে দেশের জনগণ তার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে যে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারবে না। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্ব কি বলছে, এই সরকারের অধীনে আন্তর্জাতিক মানের সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না? সে জন্যই তারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলছে। আমরা বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে নির্বাচন, তারা সেভাবে বলবে না। তারা বলছে, সুষ্ঠু নির্বাচন। যেটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারকেই বোঝায়। তত্ত্বাবধায়কের কথা বিদেশিরা বলবে না। তত্ত্বাবধায়কের দাবি উঠছে দেশের জনগণের কাছে থেকে।’

বিজ্ঞাপন

তারা কিছু বলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা তো এসেছে পর্যবেক্ষণের জন্য। যেমন এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে, পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না।’

‘কোনো মতামত নিয়েছে কি না’— এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘তারা এ দেশের জনগণের মতামত নেবে।’

মার্কিন প্রাক-পর্যবেক্ষক দল কোনো কিছুর ব্যাপারে বিশেষভাবে জানতে চেয়েছে কি না?— এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘সব কিছুর বিষয়ে জানতে চেয়েছে তারা।’

এর আগে, সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল পৌনে ১১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে এ বৈঠকে বসে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামাও ওবায়েদ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।

মার্কিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন— রিক ইনডেরফোর্থ, মারিয়া চিন আব্দুল্লাহ, মানপ্রীত সিং আনন্দ, জেমি স্পাইকারম্যান, আকাশ কৌলরি, বোনি গ্লিক, জামিল জাফর, জো কাউয়ি, ক্রেগ হ্যালাসটেড, জফরি ম্যাকডোনাল্ড, ড্যানিয়েল রেলি ও কাজী শহিদুল ইসলাম।

এর আগে, শনিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল ঢাকায় পৌঁছান। প্রতিনিধি দলটি আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক-নির্বাচনী এ সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করবে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)।

বিজ্ঞাপন

সফরকালে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক পর্যবেক্ষক, নাগরিক সংগঠন এবং নারী ও তরুণদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাদের। এর বাইরেও বাংলাদেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

এ প্রতিনিধি দলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) তিনজন ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) দুই থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। এ দলটি আসার বিষয়ে গত ২৫ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে জাতিসংঘে দায়িত্ব পালন করছেন এমন ব্যক্তিও রয়েছেন দলে, আছেন মালয়েশিয়ার সাবেক একজন সংসদ সদস্যও।

গত ১ আগস্ট নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

সফর শেষ হলে প্রতিনিধিদলটি একটি বিবৃতিও দেবে। নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে তাদের যদি কোনো উদ্বেগ থাকে তা জানাবে এবং বাস্তব সম্মত সুপারিশ থাকলে তা-ও উল্লেখ করবে ওই বিবৃতিতে।

এ প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ওপর আগামী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, তা নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

সম্পর্কিত খবর