মানসিক রোগী বাড়ছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই
১০ অক্টোবর ২০২৩ ০০:৫৯
ঢাকা: দেশে বড় একটি জনগোষ্ঠী মানসিক রোগে আক্রান্ত হলেও তাদের চিকিৎসার জন্য সাইকিয়াট্রিস্ট (মনোব্যাধির চিকিৎসক) বা সাইকোলজিস্টের (মনোবিজ্ঞানী) ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগছে। আর প্রাপ্তবয়স্কদের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানসিক রোগে আক্রান্ত।
সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে মনোবিদরা এসব তথ্য জানান।
১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানসিক স্বাস্থ্য সর্বজনীন মানবাধিকার।’
সংবাদ সম্মেলনে ২০২১ সালের মানসিক স্বাস্থ্য তথ্যচিত্রের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, দেশে মানসিক রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের মধ্যে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ অতি উদ্বেগে (জেনারেলাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার) ভোগে। বিষণ্নতায় (ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার) ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, সোমাটিক সিম্পটম ডিসঅর্ডারে ২ দশমিক ৩ শতাংশ, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডারে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তের হার শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
শিশু-কিশোরদের মানসিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা জানানো হয়, তাদের মধ্যে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, কনডাক্ট ডিজঅর্ডারে ১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে অতি উদ্বেগের হার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
সভায় মনোবিদ ডা. মোহিত কামাল বলেন, যারা রোগী নয়, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা তাদেরও দায়িত্ব। যেমন প্রয়োজন শারীরিক ফিটনেস, তেমনি প্রয়োজন রয়েছে মনের ফিটনেসেরও। সৃজনশীল বই পড়ার মাধ্যমে মনের অন্ধকার দূর হতে পারে। শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন কাউসার বিপ্লব বলেন, অনেকেই মানসিক সমস্যাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন না, সঠিক চিকিৎসাও করাতে চান না। ফলে মানসিক সমস্যা আরও বেশি বাড়তে থাকে। মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।
বক্তারা জানান, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার অন্যতম কারণ মাদক গ্রহণ। মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাও পর্যাপ্ত নয়। প্রতি এক লাখ নাগরিকের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে কর্মরত জনশক্তি মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ জন। এর মধ্যে সাইকিয়াট্রিস্ট প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার জন্য শূন্য দশমিক ১৭ জন, সাইকোলজিস্ট প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার জন্য শূন্য দশমিক ৩৪ জন। সাইকিয়াট্রিক ওয়ার্কার আছেন প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার জন্য শূন্য দশমিক ০০৪ জন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএপির সদস্যরা মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় জনবল বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস মানসিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য দিবস মোহিত কামাল