তথ্য গোপন করে ছাত্রলীগ নেত্রী বাগিয়েছেন আওয়ামী লীগের পদ!
১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৩২
জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েও তা গোপন করে সাবেক ছাত্রনেতা পরিচয়ে আওয়ামী লীগের পদ বাগিয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী জিনিয়া আফরীন। অভিযোগ, শাখা ছাত্রলীগ কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটিকে না জানিয়ে তথ্য গোপন করে ক্ষমতাসীন দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির ‘সদস্য’ পদ পেয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। যার কার্যক্রম এখনও চলমান। সেই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিনিয়া আফরীন। শাখা ছাত্রলীগের পদে থেকেও সেই তথ্য গোপন করে সম্প্রতি ঘোষিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হয়েছেন তিনি।
গত ৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সভাপতির নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটির নথিতে দেখা যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক জিনিয়া আফরীনের নাম। শাখা ছাত্রলীগের পদে থাকলেও বিজ্ঞপ্তিতে তার নামের পাশে লেখা রয়েছে সাবেক ছাত্রনেতা। তার এমন কাণ্ডে তথ্য গোপন করে আওয়ামী লীগের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেন্দ্রীয় ও শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পদ বাগিয়ে নিলেও তিনি শাখা ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি নেননি। পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কোনো চিঠি পাননি শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ ২ নেতাও। ইস্তফার ব্যাপারে জানেন না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দফতর সেলও।
একইসঙ্গে দুই পদে থাকার বিষয়ে জিনিয়া আফরীন বলেন, ‘আমি জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি নিইনি। আমি সাবেক নই, একসাথে দুই কমিটিতে আমার সিনিয়রদের দায়িত্ব পালন করতে দেখেছি, তাই দুই কমিটিতেই আমি দায়িত্ব পালন করছি।’
সাবেক ছাত্রনেতা কেন লেখা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা পদপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়েছে সবাই সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে ওখানে লিখেছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছুই জানি না।‘
জবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ কমিটিতে সাবেক ছাত্রনেতারা পদ পেয়েছেন। এটি সাবেকদের সংগঠন। জিনিয়ার উচিৎ ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি নেওয়া। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো চিঠি পাইনি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘আমাদের কাছে পদ থেকে ইস্তফা চেয়ে তার কোনো চিঠি আসেনি। আমরা মৌখিকভাবেও শুনিনি। কেন্দ্রীয় কমিটিকে ইস্তফা দিয়ে থাকতে পারে তবে সে বিষয়ে আমার জানা নেই। আমরা কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি অবগত করবো, তারা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবেন।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা মেফতাহুল ইসলাম পান্থ বলেন, ‘ছাত্রলীগে পদে থাকাকালীন সে আওয়ামী লীগে পদ পেতে পারে। তবে পরবর্তীতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়।’
‘সাবেক ছাত্রনেতা’ ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগে পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে সাবেক বা বর্তমান খুব বেশি পার্থক্য নয়। তিনি সেখানে আগের কোনো পদবি ব্যবহার করেছেন হয়তো।’
এবিষয়ে কথা বলতে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসাইনকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সারাবাংলা/এমও