প্রসূতি ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে ‘মারামারি’
১০ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কয়েকজন শিক্ষানবীশ চিকিৎসকের মধ্যে মারামারির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দু’জন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক নগরীর পাঁচলাইশ থানায় পাল্টাপাল্টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
গত রোববার (৮ অক্টোবর) গভীর রাতে চমেক হাসপাতালের ৩৩ নম্বর প্রসূতি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে উভয় জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গাইনি ওয়ার্ডে মারামারির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। দু’টি সাধারণ ডায়েরি আমরা নিয়েছি। আদালতের কাছে তদন্তের অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলে তদন্ত শুরু হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. ফয়েজ উল্ল্যাহ এবং মো. আকিল হায়দার জিদান নামে আরেক শিক্ষানবীশ চিকিৎসক পাল্টাপাল্টি জিডি দুটি করেছেন। ফয়েজ উল্যাহর জিডিতে তিন শিক্ষানবীশ চিকিৎসককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- মির্জা নাজিম উদ্দিন, আতাউল্লাহ বোখারী ও আকিল হায়দার জিদান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ উল্যাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘রোববার রাত ১টার দিকে আমি এবং আমার সহপাঠী বন্ধু অভিজিৎ মিলে গাইনি ওয়ার্ডে আমার পরিচিত এক রোগীকে দেখতে যাই। সেখানে তখন দায়িত্ব পালন করছিলেন আমাদের একই ব্যাচের জিদান। আমি তাকে রোগী আমার পরিচিত বলে একটু ভালোভাবে দেখার অনুরোধ করি। তখন জিদান আমাকে বলে- তুই আমাকে রোগীকে ভালো করে দেখতে বলার কে, আমি তোর কথা শুনব কেন?’
‘একপর্যায়ে সে আমাকে ও অভিজিতকে গালিগালাজ শুরু করে। আমরা প্রতিবাদ করলে জিদান মোবাইলে কল দিয়ে নাজিম ও বোখারীকে ডেকে আনে। তিনজন মিলে আমাদের চড়-থাপ্পড়, কিলঘুষি মেরে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় জিডি করার পাশাপাশি আমাদের অধ্যক্ষ ও পরিচালক স্যারকেও লিখিতভাবে অবহিত করেছি।’
এদিকে জিদানের জিডিতে ফয়েজ উল্যাহ ও অভিজিৎ দাশের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রোববার রাত ১টার দিকে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রি-অপারেটিভ রুমে গিয়ে দু’জন তাকে তাদের এক রোগীকে দেখতে বলেন। সে সময় জিদান অন্য এক রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকায় কিছুক্ষণ তাদের রোগী দেখবেন বলে জানান। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’
এক পর্যায়ে অভিজিৎ তার শার্টের কলার ধরে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দেন ও চড়-থাপ্পড় মারেন বলে জিডিতে জিদান উল্লেখ করেছেন। এছাড়া জিদান বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করেছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন।
অভিজিৎ দাশ গত ফেব্রুয়ারিতে কলেজ ছাত্রাবাসে তিন ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে বহিষ্কৃত। ফয়েজ উল্যাহ ও অভিজিৎ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে মির্জা নাজিম উদ্দিন এবং আতাউল্লাহ বোখারীও ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে চমেক ক্যাম্পাসে পরিচিত। তবে তারা এখন ছাত্রলীগের বিবাদমান কোন গ্রুপের সঙ্গে আছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম