Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মধ্যরাত থেকে ইলিশ আহরণ বন্ধ, আইন লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২০

ঢাকা: রাত থেকে ইলিশ মাছ আহরণ বন্ধ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরার ওপরে এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, কেউ আইন লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ ইলিশ সংরক্ষণ না করা গেলে পরের বছরে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ পাওয়া যাবে না। বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুই মাস ইলিশের প্রধান প্রজননকাল। অধিকাংশ ইলিশ এই সময় ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে নদীতে প্রবেশ করে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষকদের গবেষণার ফলাফল ও সুপারিশের ভিত্তিতে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য কার্তিক পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ২২ দিন বাংলাদেশের সকল নদ-নদী, সাগর, মোহনায় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করে আইন করা হয়েছে। এই আইন বাস্তবায়নের ফলে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল। চলতি বছরেও মাঠ পর্যায় থেকে পাওয়া তথ্য উপাত্ত ও সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’ এর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এ কাজে সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে ২২ দিন স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান
বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, র‍্যাব, পুলিশ, নৌ-পুলিশ এবং মৎস্য অধিদফতর সম্মিলিতভাবে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করবে। দেশের ৩৮ জেলার সকল নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ বন্ধে দিনে ও রাতে অভিযান এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা এবং সারাদেশের মাছ ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজার, চেইনস ও অন্যান্য বিক্রয়কেন্দ্রে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ ও বিনিময় বন্ধে ব্যাপক অভিযান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ইলিশ পরিবহণের সকল স্তরে যেমন-লঞ্চ, ট্রাক, রেলযোগে পরিবহণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার মনিটরিং ও অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় নদী ও মোহনায় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে রেকি মিশন (বিমানপথে নজরদারি) পরিচালনা করা হবে। ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে সহযোগী সকল সংস্থার প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে মৎস্য অধিদফতরে কেন্দ্রীয় সমন্বয় সেল, বিভাগীয় মনিটরিং টিম এবং মৎস্য অধিদফতর ও আওতাধীন বিভাগীয় দফতরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এত কিছুর পরেও যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ ইলিশ সংরক্ষণ না করা গেলে পরের বছর আমরা পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ পাব না।

মন্ত্রী বলেন, এই ২২ দিন ইলিশ সমৃদ্ধ এলাকার দরিদ্র জেলেদের জীবনধারণের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। এর আওতায় ইতোমধ্যে দেশের ইলিশসমৃদ্ধ ৩৭ জেলার ১৫৫ উপজেলার মোট ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৭ টি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি হারে মোট ১০ হাজার ৮৭২,১৮ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, শুধু মা ইলিশ রক্ষার সময়ই নয়, জাটকা ধরা নিষিদ্ধকালেও এবছর দেশের ২০ জেলার ৯৭টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত মোট ৩ লাখ ৯০ হাজার ৭০০ জন জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি হারে ফেব্রুয়ারি-মে পর্যন্ত ৪ মাসের জন্য ৫৯ হাজার ১৪১.০৪ মেট্রিক টন ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর