মোংলা-খুলনা ট্রেনের ট্রায়াল রান দেখবেন রেলমন্ত্রী
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:১৫
বাগেরহাট: আগামী ৯ নভেম্বর চালু হচ্ছে স্বপ্নের খুলনা-মোংলা রেল পথের। আন্তজার্তিক সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর এ স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই খুলনা-মোংলা রেল পথ প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। তাই আজ এই রেললাইনে ট্রেনের ট্রায়াল রান দেখবেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
শনিবার (১৪অক্টোবর) দুপুরে খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ট্রেনে ট্রায়াল রান দেখবেন রেলমন্ত্রী। এরপর আগামী ৯ নভেম্বর খুলনা-মোংলা রেল পথের উদ্ধোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই রেলপথ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণও দেবেন। খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহন সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এছাড়াও সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ সরাসরি বন্দরে ভিরতে পারার যে সক্ষমতা অর্জন করেছে তা আরও গতিশীল করবে এই রেল সংযোগ।
খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম জানান, প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ, মূল রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং স্থাপন। ২০১১ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফায় সংশোধনের পর ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেইসঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে। বাকি কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও নানা কারণে কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনের কারণে ব্যয় বেড়েছে দুই হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এবার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুরর কাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ২৫ জুন সপ্তম ও শেষ স্প্যানটি বসে রূপসা রেলসেতুতে। রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক এক তিন কিলোমিটার রেলসেতুর পুরোটাই শেষ হয়েছে। এই রেলপথের ১১টি স্টেশনের প্লাটফর্মের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যেই এই রেলপথের ১০৭টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে।
শতভাগ কাজ শেষে আজ ট্রেনের একাধিক ট্রায়াল রান দেওয়া হবে। বিভিন্ন স্থানে রেলপথের ফিনিশিং, সিগনালিং ও টেলিকমিউনিকেশনের কাজও শেষের পথে। এই রেলপথ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বিশ্বের একমাত্র নিরবিচ্ছিন্ন রেল সংযোগ হবে মোংলার সঙ্গে। এর মাধ্যমে আন্তজার্তিক সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর এ স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে।
সারাবাংলা/এনএস