তলে তলে আসলে কিছুই হয় নাই: মির্জা ফখরুল
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২৫
ঢাকা: গণতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ‘তলে তলে’ কিছুই হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত ‘প্রতীকী গণঅনশন’ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) আবারও বলে, বলতে তারা খুব আনন্দ পায়। সেটাকে আবার বলে যে, রাজনৈতিক রসবোধ। তলে তলে নাকি সব আবার হয়ে গেছে। বারবার এ কথাটা কেন বলে? এই জন্যই বলে, আসলে কিছুই হয় নাই। গোটা বিশ্ব, গণতান্ত্রিক বিশ্ব আজকে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিষ্কার করে বলছে এবং একটা সুষ্ঠু, আবধা নির্বাচন করতে বলছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আর বক্তব্যের কিছু নাই। বক্তারা আজকে পরিষ্কার করে জানিয়েছেন। বিশেষ করে সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা আজকে এসেছিলেন, তারা সংহতি জানিয়েছেন। শুধু সংহতি জানায় নাই, তারা শপথ নিয়েছেন, প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, দেশনেত্রীকে মুক্ত না করে, এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট হানাদার সরকারকে বিদায় না করে, তারা কেউ বিশ্রাম করবেন না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। এদের সরকার বলা যায় না। এরা শাসক। তার প্রমাণ তাদের কথার মধ্যে দেখবেন। কী ভয়ংকর কথা! বিএনপি একটি দল, যেটি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক একটি দল। তিনবার ক্ষমতায় ছিল। তারা (আওয়ামী লীগ) ঘোষণা দেয় যে, এরা আমাদের শত্রু। তারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে কোনো রাজনৈতিক দলকে তারা শত্রু বলতে পারে না।’
‘এই দলটি (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেগম আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’- বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘তারা গণতন্ত্রে যে বিশ্বাস করে না, এটা বারবার প্রমাণ হয়েছে। তারা আইনের শাসনেও বিশ্বাস করে না। গতকাল নরসিংদীর দুই ছাত্র নেতাকে কমান্ড কায়দায়, সম্পূর্ণ আইন-কানুনকে না মেনে, ভঙ্গ করে তারা দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। শুধু তাই নয়, আরও কথা বলেছে, যেটা ভয়াবহ কথা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্রের মুক্তি- এ দু’টো সমার্থক, অবিচ্ছেদ্য। তাই আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে আমরা আন্দোলন করছি, একই সঙ্গে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি, এই দু’টোকে এক করে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামনের দিনগুলোতে এবং যে কথাটা আমাকে সবাই বলছে, সামনে পূজা আছে। এই পূজার মধ্যে আমরা সব সময় বলেছি যে, আমরা সম্পূর্ণভাবে একটা শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। আমরা চাই না, ওই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা আবার সেই সমস্য তৈরি করুক।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে করেছে দেখেছেন। গতকাল কুমিল্লাতে তারা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। তারপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়ে তাদেরকে আহত করেছে এবং সেখানকার এমপি কী বলেছে, সেটা আপনারা সবাই জানেন।’
আজকে আমরা অনেক পথ চড়াই উৎরায় পার হয়ে এসেছি। এখন আমাদের সামনে লক্ষ্য একটাই যে, আমাদের দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতি বাঁচাতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, একই সঙ্গে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক কর্মীকে বাঁচাতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে এদেরকে (সরকার) পরাজিত করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।’
‘আসুন, আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, চিকিৎসা করি এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে গণঅনশনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহম্মদ ইবরাহিমসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/এমও