‘মিনি সুন্দরবন’ দেখতে নন্দীগ্রাম ছুটছেন সবাই
১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৯
বগুড়া: উত্তরবঙ্গের রাজধানী খ্যাত বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর দিয়ে বয়ে গেছে ভদ্রাবতী নদী। সেই মুরাদপুর বাজারে নন্দীগ্রাম-শেরপুর রাস্তার সংযোগ সেতুর দক্ষিণ ও উত্তরে নদীটির দুই তীরের তিন কিলোমিটারজুড়ে গাছপালার মেলা যেন। একনজরে দেখে মনে হতে পারে, এ যেন প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন!
এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতেই প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় করছে মুরাদপুর ভদ্রাবতী নদীতে। নন্দীগ্রাম উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার ও শেরপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জায়গাটি সুন্দরবনের সঙ্গে সাদৃশ্যের কারণে পরিচিতিই পেয়ে গেছে ‘মিনি সুন্দরবন’ নামে। সম্প্রতি নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এর সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে।
নন্দীগ্রাম, শেরপুর, বগুড়া ও নাটোরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠছে ‘মিনি সুন্দরবন’ তথা মুরাদপুর। সকালের দিকে লোকজনের চাপ খুব একটা দেখা যায় না। তবে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই সেখানে দেখা যায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। নৌকা নিয়ে তারা ঘুরে বেড়ান মুরাদপুরের আনাচে কানাচে।
নৌকা নিয়ে মিনি সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে জনপ্রতি দিতে হয় ৩০ টাকা। এ ছাড়া পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে গেলে নৌকা রিজার্ভ করে ঘোরাঘুরির সুযোগও আছে। এরকম লোকজনের আনাগোনায় এখন স্থানীয় মাঝিদের উপার্জন অনেকটাই বেড়ে গেছে।
মাঝিরা বলছেন, একেকটি নৌকা থেকে এখন তাদের আয় হচ্ছে দিনে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। যতদিন পানি থাকবে, ততদিন তারা বেশ ভালোভাবেই এই উপার্জন ধরে রাখতে পারবেন। এতে তাদের আয় যেমন হবে, তেমনি মানুষকেও জায়গাটির সৌন্দর্য ঘুরিয়ে দেখানোর মাধ্যমে নিজেরাও আনন্দ পাবেন।
কেবল নৌকার মাঝিরা নন, মিনি সুন্দরবনের কল্যাণে আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদেরও আয়-রোজগারও বেড়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শামীম হোসেন বলেন, আগে তো খুব বেশি মানুষ আসত না। এখন এখানে প্রচুর মানুষ আসে। সকালে লোকজন কম থাকলেও বিকেলে অনেক লোকজন দেখা যায়। তাদের উপস্থিতিতে মুরাদপুর বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে মুরাদপুর ভদ্রাবতী নদীতে অনেক লোকজন বেড়াতে আসছেন। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি এলেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাতে থাকেন। বর্ষাকাল পেরিয়ে ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক মাস পর্যন্ত মানুষজনের আনাগোনা থাকে। এলাকাবাসীই ওই জায়গার নাম দিয়েছে মিনি সুন্দরবন। নৌকায় উঠে দুপাশে তাকালে সুন্দরবনের মতোই মনে হয়।
নন্দীগ্রাম উপজেলায় কোনো বিনোদনকেন্দ্র নেই। তাই সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিলে এখানে একটি বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রাহমান। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তিনি ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সারাবাংলা/ইআ