Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ শিক্ষার্থীর দুজনই আত্মহত্যাপ্রবণ, হতাশা বেশি জীববিজ্ঞান অনুষদে

সাইফুর রহমান সৈকত, বশেমুরবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট
১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৩

বশেমুরবিপ্রবি: পারিবারিক, আর্থিক, মানসিক এবং হতাশাজনিত কারণে বর্তমানে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। সম্প্রতি করা এক সমীক্ষায় দেখো গেছে, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শতকরা ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীও রয়েছে এই আত্মহত্যার ঝুঁকিতে। সমীক্ষায় দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে জীববিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি হতাশায় রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চালানো ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক-স্বাস্থ্য সমীক্ষা, বশেমুরবিপ্রবি, ২০২৩’- এর এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা।

জরিপের তথ্যমতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক চাপ কিংবা পারিবারিক, অর্থনৈতিক এবং হতাশাজনিত কারণে আত্মহত্যার কথা চিন্তা-ভাবনা করেন। সমীক্ষাটি ২০২৩-এর চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা যাচাইয়ের জন্য করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ৮টি অনুষদে প্রায় ১২হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে জীববিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি মানসিক সমস্যায় রয়েছেন। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবণতা ২০ শতাংশ।

মানসিক সমস্যার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা। যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবণতা রয়েছে ১৯.৭ শতাংশ।

সমীক্ষায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে, কলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবণতা রয়েছে ১৫.৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে। যথাক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশায় অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞান অনুষদে রয়েছে ১৩.২ শতাংশ শিক্ষার্থী, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে রয়েছে ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে রয়েছে ১০.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

এই সমীক্ষায় সবচেয়ে কম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কৃষি ও আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সমীক্ষা অনুযায়ী, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। মানসিক চাপ সামলাতে ৮৩.২ শতাংশ শিক্ষার্থী অসহায় মুহূর্তে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এছাড়া ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করার চিন্তা-ভাবনা করেন বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন বলে সমীক্ষায় দেখা যায়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্র পরামর্শ দাতা থাকলেও শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না। তাই সম্প্রতি মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে কাউন্সিলিং সেবা চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে টেলি-কাউন্সিলিং সেবাও রয়েছে। যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এই সেবা নিতে পারবেন।

মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি নাসরিন নাহার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে মানসিকভাবে খুবই দুর্বল এবং ইমোশনাল। তাই তারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। আর এর কারণ হচ্ছে তারা মানসিকভাবে সুস্থ না। সেজন্য তাদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’

সারাবাংলা/এমও

আত্মহত্যাপ্রবণ জীববিজ্ঞান অনুষদ হতাশা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর