Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘তারেক কেন মাকে দেখতে আসে না, এটা কেমন ছেলে?’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০৪

ঢাকা: খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনশনের সমালোচনা করে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছেলে কেন মাকে দেখতে আসে না, এটা কেমন ছেলে? মা এত অসুস্থ, মরে মরে। মাকে দেখতে আসে না কেন? বিএনপি নেতারা অনশন করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে চায়। নেবেটা কে? যে ছেলে মাকে দেখতে আসে না, সে নেবে?

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাওলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী দিনে জনসভা হওয়ার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়া বিবেচনায় এক সপ্তাহ পেছানো হয়েছিল। আজ সেই জনসভা অনুষ্ঠিত হলো।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার ভাইবোনের অনুরোধে তার সাজা স্থগিত রেখে বাড়িতে রাখার সুযোগ করে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তার বড় বোন ও ভাই, বোনের জামাই আমার সাথে এবং রেহানা সাথে দেখা করে। গণভবনে আসে কান্নাকাটি করে। সরকারপ্রধান হিসাবে আমার যেটুকু ক্ষমতা তার সবটুকু করেছি। যদিও সে আমাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা, কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা ও বারবার হামলা করেছে। কারণ, সে এক একটা বক্তৃতা দিয়েছে, তার পর আমার ওপর হামলা হয়েছে। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছে। আমার নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন দেখি বিএনপির নেতারা তার বিদেশে চিকিৎসার দাবি নিয়ে অনশন করে। আমি জিজ্ঞাসা করি, এখানে তো সাংবাদিকরা আছে, সবাই আছে। তারা কয়টা থেকে অনশন শুরু করেছে, আর বাসায় কী দিয়ে নাস্তা করে এসেছে? আর বাড়ি যেয়ে কী দিয়ে ভাত খাবে? কয় ঘণ্টার অনশন? নাটক করারও একটা সীমা থাকে। এই নাটকই করে যাচ্ছে তারা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘তারা নাকি আমাদের উৎখাত করে দেবে? সময় দিয়েছিল ১০ ডিসেম্বর। বিজয়ের মাস তখন, আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাত করবে, যে সরকার জনগণের ভোটে বারবার নির্বাচিত হয়েছে।’ দেশের মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, লুটপাট, মানি লন্ডারিং ও হত্যার কারণে ২০০৭ সালে এদেশে জরুরি অবস্থা জারি হয় বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সেই জরুরি অবস্থার সময় খালেদা জিয়ার ছেলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। জীবনে আর নাকি রাজনীতি করবে না। কিন্তু যে টাকা সে মানি লন্ডারিং করেছিল, যেটা ধরা পড়ে। তার দুর্নীতির সাক্ষী কিন্তু এফবিআই বাংলাদেশে এসেই দিয়ে যায়। সেই মামলায় তারেক সাজাপ্রাপ্ত। এফবিআই’র সাক্ষীতেই সাজাপ্রাপ্ত। তাদের ব্যবসা ছিল অস্ত্র চোরাকারবারি ও মানি লন্ডারিং। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে হত্যা মামলারও সে আসামি।’

তারেক জিয়া প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ‘আমি তো বলব, তারেক মাকে দেখতে আসুক। খালেদা জিয়ার আরেক ছেলে কোকো মারা গেল। তার বিরুদ্ধেও মানি লন্ডারিং দুর্নীতির মামলা ছিল। কিন্তু সে মালয়েশিয়াতে মারা যায়। তার লাশ আসে। আমি একজন মা। আমারও সন্তান আছে। আমি খালেদা জিয়াকে সহানুভূতি দেখাতে গিয়েছিলাম। আমার তরফ থেকে আমার মিলিটারি সেক্রোটারি তাদের বাসায় যোগাযোগ করে মময় ঠিক করে। কিন্তু আমি যখন সেই বাসার সামনে যাই, বাসার গেট তালা দিয়ে বন্ধ করে দেয়।’

সেদিনের সেই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গেটে তালা মারা আমাকে ঢুকতে দেবে না। কত বড় অপমান আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন। আমি গেছি সহানুভূতি দেখাতে। আর সেখানে আমাকে সে ঢুকতে দেয় না। আর খালেদা জিয়া ভুলে গেছে একাত্তরের পর ওই বত্রিশ নম্বরের বাড়িতে গেছে। জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিব না থাকলে আর আমার মা সহযোগিতা না করলে ওই বেগম জিয়া হিসাবে নিজের নাম পরিচয় দিতে পারত না। এটা হলো বাস্তবতা। তখন কোথায় থাকতো।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারপরও আমি বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। তারা অনশন করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে চায়। নেবেটা কে? যে ছেলে মাকে দেখতে আসে না সে নেবে?’ সেই আশা দূরাশা বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

কেমন ছেলে তারেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর