বিদেশে খালেদার জিয়ার চিকিৎসার পক্ষে জাপা মহাসচিব
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৫৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলেও ওনার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে জাতীয় পার্টির নৈতিক সমর্থন রয়েছে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘পল্লীবন্ধু এরশাদ যখন নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে ছিলেন, উনাকে চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল মেডিকেল বোর্ড। তখন বিএনপি ক্ষমতায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, জেলে মারা গেলে মারা যাক। বেগম খালেদা জিয়া সেদিন এরশাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি। অথচ আজ তিনি আজকে সেটিই ভোগ করছেন।’
বিদেশে হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচারের জন্য আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন মহাজোট করি, ২১ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ছিল। এখন সেটা দেড় লাখ কোটি টাকা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে হাজার কোটি টাকা লুট করেছে সরকার। বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করেছে, অথচ সঞ্চালন লাইন লাইন তৈরি না করে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছে।’
‘সরকারের এমপিরা অনেকে আমেরিকা বাড়ি করেছে, তারা কীভাবে টাকা নিয়ে গেছে, সেটি সংসদে প্রশ্ন রেখেছিলাম। সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি মন্ত্রী। বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই দলই জনগণের টাকা চুরি করেছে। এরা দেশের জনগণের কথা ভাবে না। ফ্লাইওভার করে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ বেকার।’
জাতীয় পার্টি এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘৯০ সালে তারা ফতোয়া দিয়েছিল, জাতীয় পার্টিকে কোনো দলে নেওয়া হবে না। কিন্তু এখন বিএনপি বলে কি কি লাগবে ? আওয়ামী লীগ বলে আমাদের রেখে চলে যাবেন ! পরবর্তী সময়ে আপনাদের মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু আমরা জাতীয় পার্টি থেকে ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার চেষ্টা করবো। জাতীয় পার্টি নতুনরুপে এগিয়ে যাবে।’
এদিকে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের বি-টিম হবে না মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, ‘১৯৯০ সালের পর থেকে যখনই যে ক্ষমতায় গেছে, জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছে। এই সরকারও জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু কেউই জনগণের হৃদয় থেকে জাতীয় পার্টিকে, লাঙ্গল প্রতীককে মুছে ফেলতে পারেনি। বরং আজকে সেই লাঙ্গল প্রতীক, জাতীয় পার্টি আরও উজ্জীবিত হয়েছে, আরও শক্তিশালী হয়েছে। ক্ষমতার জন্য জাতীয় পার্টি লড়াই করছে না। সময় আসবে, ভবিষ্যতে জনগণের আশা আমরা পূরণ করতে পারব, যেটা বিএনপি-আওয়ামী লীগ কেউ পারেনি।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো- চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জহুরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, এসএম ফয়সল চিশতী এবং এটিউ তাজ রহমানও বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে সোলায়মান আলম শেঠ চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও আবু জাফর কামালকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/একে