Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিচারকের সই জাল করে আসামিদের অব্যাহতির চেষ্টা, গ্রেফতার ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০০:৫৯

বিচারকের সই জাল করার ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচজন। ছবি: সারাবাংলা

বগুড়া: বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারকের সই জাল করে অভিযুক্ত আসামিদের মুক্তির আদেশ তৈরির অভিযোগে বে-সহকারী (পেশকার) ও জারিকারকসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সই জাল করে যে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল, সেই মামলার অভিযুক্ত চারজনকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) মামলাটি করেন বগুড়ার চিফ জুসিডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাকছুদুর রহমান। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওয়ালিউল্লাহ দণ্ডবিধির ২০১/২১৩/৪৬৬/৩৪ ধারা উল্লেখ করে মামলাটি রেকর্ড করেন। পরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার পাাঁচজন হলেন— বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. কামরুজ্জামান, জারিকারক এম এ মাসুদ, উমেদার হারুন অর রশিদ সাজন, জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সেরেস্তাদার মো. আব্দুল মান্নান ও তার ছেলে মো. আবু সাহেদ।

এজাহারে বলা হয়েছে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতে ২৩ জিআর নম্বর ৭৯০/২০ (সদর) মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল গত ১৪ মে। মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে ১ নম্বর আসামি আয়শা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। বাকি চার আসামির মধ্যে আবু শাহেদ, মুক্তার হোসেন ও ওয়াহেদুজ্জামান মাসুদ হাজিরা দাখিল করেন। আসামি মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে সময় প্রার্থনা করেন তার আইনজীবী।

এজাহারে আরও বলা হয়, সাক্ষী না আসায় আসামিপক্ষে সময়ের প্রার্থনা মঞ্জুর করে আদালত পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন। ওই আদেশের পর থেকেই নথিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে ওই আদালতের বে-সহকারী ফজলুর রশিদের মাধ্যমে মামলার নথিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

ওই নথিতে দেখা যায়, শুনানির পর ১৪ মে বিচারকের অজ্ঞাতসারে আসামি আবু সাহেদের পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৯ ধারার বিধান অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম স্থগিতের দরখাস্ত নথিতে সংযুক্ত করে তা মঞ্জুর করার মাধ্যমে আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে আদেশ লেখা হয়। ওই আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে আদেশটি তৈরি করা হয়েছে এবং আদেশে বিচারকের সই জাল করা হয়েছে। মামলাটি ৫ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন হয়ে মাত্র সাক্ষীর জন্য দুইটি নির্ধারিত তারিখ অতিবাহিত হয়েছে। সাক্ষীদের প্রতি সমনও সঠিকভাবে ইস্যু করা হয়নি।

আদালতের সাবেক বে-সহকারী মো. কামরুজ্জামান ও জারিকারক এম এ মাসুদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, বগুড়া জেলা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বে-সহকারী মো. আব্দুল মান্নান ও তার ছেলে উমেদার শাহেদ জিআর মামলার অন্যান্য আসামিদের অনুরোধে ও আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে আদালতের পেশকার নিয়োজিত উমেদার হারুন অর রশিদ সাজন আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লার সই জাল করে আসামিপক্ষে নথিতে সংযুক্ত করেন। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৯ ধারার দরখাস্ত মঞ্জুর করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে আসামিদের অব্যাহতির আদেশ তৈরি করেন।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান জানান, এজাহারের বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ এরই মধ্যে অভিযান শুরু করেছে।

সারাবাংলা/টিআর

বগুড়া বিচারকের সই জাল সই জালিয়াতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর