‘বাহারের বক্তব্যে আমাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে’
১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৫৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ‘মদমুক্ত পূজা’ বক্তব্য সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত বলেছেন, কুমিল্লার সাংসদ বাহাউদ্দিন বাহারের বক্তব্য আমাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে, আমরা কষ্ট পেয়েছি। পূজার সঙ্গে মাদকের কোনো সম্পর্ক নেই।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, পূজা আমাদের পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এখানে অনাকাঙ্খিত যে মন্তব্য সেdt আমরা মনে করি এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং পূজার যে পরিবেশ সেdt বিনষ্ট করার অপচেষ্টা।’
‘চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশে এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র ও যুব পরিষদ কর্মসূচি পালন করেছে। কুমিল্লার ঘটনা নিয়ে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে গেছেন। তারা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন। বৈঠকের পরে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একটি মামলা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু তিনি দলীয় সংসদ সদস্য সেখানেও আমরা বক্তব্য দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীন এই বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সকলের শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকার আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে তিনি আমাদের একটি অসাম্প্রদায়িক সংবিধান দিয়েছেন। সেটা ৭২’র সংবিধান। সেটাকে দফায় দফায় সংশোধন করে সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে আমরা সবসময় বলেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন আটটি দাবি জানান।
এর মধ্যে রয়েছে সব উপজেলায় একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণ, চণ্ডীতীর্থ মেধস আশ্রমের সংস্কার ও সড়কের উন্নয়ন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, দুর্গোৎসবে চার দিনের সরকারি ছুটি, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়নে জটিলতার নিরসন এবং রানি রাসমণি বারুণী স্নানঘাট তথা সমুদ্রতীর্থ সংরক্ষণে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ।
তিনি বলেন, ‘এবার চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ২ হাজার ১৭৫ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হচ্ছে। এর মধ্যে সর্বজনীন প্রতিমা পূজা ১ হাজার ৬৫১টি ও ঘটপূজা ৫২৪টি। সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।’
এবার পূজা পর্যবেক্ষণের জন্য পরিষদের জেলা কন্ট্রোল রুম ও ৩টি পর্যবেক্ষণ টিম থাকবেও বলে তিনি জানান।
এ সময় চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিতাই প্রসাদ ঘোষ, সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার, সহ সভাপতি বিপুল কান্তি দত্ত, সুনীল ঘোষ ও বিশ্বজিৎ পালিত উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/একে