এবার লন্ড্রি ব্যবসায়ীকে উঠিয়ে নিয়ে গেল পাজেরো গাড়ি
১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ২১:২২
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
গাড়িতে স্যার ডাকছেন। মিন্টু ভাই গেলেন। গাড়ির দরজা খুলে গেলো। মাথা নিচু করে মিন্টু ভাই কি যেন শুনতে গেলেন। এরপরই তাকে ধাক্কা দিয়ে ওই পাজেরো গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে গাড়ি টান দিয়ে চলে গেলো। রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে রোববার বিকাল ৩টার দিকে লন্ড্রি ব্যবসায়ী সিরাজুল হক মিন্টু নামে এক ব্যক্তিকে এভাবেই পাজেরো জীপে তুলে যায় কে বা কারা।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সারাবাংলার কাছে এভাবেই মিন্টুর শ্যালক নিয়াজ মোহাম্মদ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় শ্যালক নিয়াজ মোহাম্মদ রোববার রাতেই ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নম্বর-৮২১।
নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, আজাদ নামে তার এক বন্ধু চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় প্রায়ই আসেন। গত শুক্রবার আজাদ ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে এক রোগীকে ভর্তি করান। শনিবার অপারেশন হয়েছে। রোববার আজাদসহ দুলাভাই মতিঝিল থেকে একই সাথে আসেন। রোগী দেখার পর আবার একই সাথে মতিঝিল যাওয়ার জন্য সিএনজি ডেকে কথা বলছিলেন। এ সময় পেছন একজন ব্যক্তি নিয়াজ নাম ধরে ডাক দেন। দুলাভাই পাশেই ওই লোকের সাথে কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পর একটি পাজেরো গাড়ি আসে। এরপর ওই লোক বলেন, গাড়িতে স্যার বসে আছেন। স্যার আপনাকে ডাকছেন। তখন দুলাভাই গাড়ির কাছে গিয়ে কি যেন বলার জন্য মাথা নিচু করেন। এরপরই তাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায় গাড়িটি। এরপর উপস্থিত লোকজন সবাই ভিন্ন ভিন্ন দিকে চলে যান।
আপনি এতোসব কিভাবে জানলেন জানতে চাইলে শ্যালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, দুলাভাইয়ের খোঁজ না পেয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে যাই। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বিষয়টি জানতে পারে । এরপর ধানমন্ডি থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত দুলাভাইয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কেউ মুক্তিপণ চায় কিনা অপেক্ষা করছি। তার একমাত্র মেয়ে পৃথি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন। কেউ পাওনাপাতি পায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম কিছু এর আগে দুলাভাই শেয়ার করেননি। থাকলেও থাকতে পারে তবে আমরা কেউ জানি না। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার জানামতে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
মিন্টু হাজারীবাগের ৬৮/১ এনায়েতগঞ্জ লেনের বাসিন্ধা। তিনি লন্ডি ব্যবসায়ী ছিলেন। তার একমাত্র মেয়ে রাইয়ান হক পৃথি এমবিএ করছেন। পৃথির মা গত নভেম্বরে মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধানমন্ডি জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহিল কাফি সারাবাংলাকে বলেন, মিন্টু সমাজের এমন কেউ নন যে তাকে অপহরণ করা হতে পারে। আবার তুলে নেওয়ার সময় কেউ চিৎকারও করলেন না। এমনকি তার বন্ধু আজাদও চিৎকার করেননি। জিডি হয়েছে। সেটাকে ধরে তদন্ত করা হচ্ছে। কি ধারণা করছেন জানতে চাইলে এসি বলেন, পাওনা টাকা কেউ পেতে পারেন। এজন্য নিজেই নিরুদ্দেশ থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/ইউজে