দিনাজপুর: আপীল বিভাগ কর্তৃক দেওয়া ১ মাসের সাজা ভোগ করতে দিনাজপুরের আলোচিত পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার উল্যাহ’র আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। এর আগে, তিনি শহরের জেল রোডে দলীয় কার্যালয় থেকে দিনাজপুর পৌরসভায় আসেন। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে আদালতে যান।
দিনাজপুর পৌরসভার টানা তিনবারের মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
আদালতে আত্মসমর্পণের পূর্বে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে দমানোর চেষ্টা করছে। আমার একটি কথায় উচ্চ আদালত আমাকে সাজা প্রদান করেছেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করছি।’
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক একেএম লিয়াকত আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুরে উচ্চ আদালতের দেওয়া ১ মাসের সাজা ভোগ করার জন্য পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে জরিমানার ১ লাখ টাকা প্রদান করেন। বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন। পরে তাকে কড়া পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ৩ আগস্ট দিনাজপুরে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে পৌর সৈয়দ মেয়র জাহাঙ্গীর আলম তার বক্তব্য দেওয়ার সময় বেগম খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায়দানকারী বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন এবং বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন। মেয়রের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হয়। বিষয়টি নজরে আসায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। গত ২৪ আগস্ট তলব আদেশে হাজির হয়ে বিচারপতিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার ঘটনায় আপিল বিভাগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। পরে ১২ অক্টোবর তার উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ শুনানি করে ১ মাসের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ সপ্তাহের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। একইসঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ প্রদান করেন।