Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ, আর থামব না বললেন ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:১৪

ঢাকা: আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসিচব বলেন, ‘আজ আংশিক কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করব। এই মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘২৮ তারিখের মহাসমাবেশের পর আমরা আর থামব না। টানা কর্মসূচি চলবে। অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে অশান্তির এ সরকারের পতন ঘটাব আমরা।’

পদত্যাগ না করলে গণজাগরণই পতন হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি জানি এখান থেকে আপনারা ঘরে ফিরে যাবেন, ঘরে গিয়ে বসে থাকবেন না। প্রতিটি মানুষকে বলেন, মানুষ জেগে উঠেছে। সেই জাগরণের মধ্য দিয়ে অবিলম্বে এই সরকারের পতন হবে।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতৃবৃন্দ আজকে এখান থেকে পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন, সামনে যে কয়েকটা দিন সময় আছে এই পূজার ছুটি। এর মধ্যে সিদ্ধান্ত নেন যে আপনারা কী করবেন? পদত্যাগ করে স্বসন্মানে সেইফ এক্সিট নেবেন, নাকি জনগণ দ্বারা বিতাড়িত হবেন। আবার আমি আহ্বান জানাই, জনগণের ভাবনা বুঝতে পেরে, জনণের আওয়াজ বুঝতে পেরে আপনারা পদত্যাগ করে শান্তিপূর্ণভাবে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন, যেটা সম্পূর্ণভাবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আরেকটা সমস্যা তৈরি করেছে ইতিমধ্যে। আমাকে এক সাংবাদিক ভাই লেখে পাঠিয়েছেন যে, বাংলাদেশে এখন প্রেসিডেন্ট নাই। নাই মানে? দেশে তো কোনো প্রেসিডেন্ট নাই। আপনার সংবিধানে নিয়ম আছে যে, প্রেসিডেন্ট যদি বাইরে ‍যান তাহলে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা। আজকে এখন পর্যন্ত দেয় নাই, দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ এখানেও তারা (সরকার) সম্পূর্ণভাবে বেআইনি কাজ করছেন, অসাংবিধানিক কাজ করছেন এখানেও পুরোপুরিভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন।’

সমাবেশ সামনে রেখে পুলিশি ধরপাকড়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, সরকার ভয় পেয়েছে, ভীত হয়েছে এবং তারা কাঁপছে। এটা মনে রাখবেন যে, এই সরকারের পায়ের নিচে কোনো মাটি নেই। তারা পরিস্কার করে জেনে গেছে, এদেশের জনগণ তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে যে, আর নয়। এখন তোমরা দয়া করে পায়তারি গুটাও, যা চুরি করার করেছো, যে অত্যাচার-নির্যাতন করেছো এখন মানে মানে বিদায় হও।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এত মামলা, এত গ্রেফতার, এত নির্যাতন, এত অত্যাচার তারপরেও কি আপনাদেরকে দমাতে পেরেছে? নেতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে তাতে কি ভয় পেয়েছেন? মামলা দিয়ে হামলা করে, রেইড করে গ্রেফতার করে আর বাংলাদেশের মানুষকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, এটাই হচ্ছে মূল কথা।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৯৬জনকে সাজা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যে, যারা আমরা নির্বাচন করতে পারি এই ধরনের নেতাদের যদি সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা যায়, তাহলে তাদের মাঠ পরিষ্কার।’

‘কতটা কাওয়ার্ড হলে, কতটা ভীত হলে তারা এই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাই এটা পরিস্কার আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে শুধু রাজনীতি নয়, অর্থনীতি একেবারে রসাতলে যাবে। আপনারা জানেন, গত কয়েক দিনে অর্থনীতির কী অবস্থা হয়েছে, রিজার্ভের কী অবস্থা হয়েছে? মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করে, লুটপাট করে তারা বিদেশে বাড়ি-ঘর তৈরি করেছে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আর নতুন নতুন করে উদ্বোধন করে আর একটা করে প্রস্তর খণ্ড লাগায়। এই প্রস্তর খণ্ডগুলো টিকবে না। এগুলো নিমজ্জিত হতে চলেছে। ওটা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। জনগণ আর আপনাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’

বেগম খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। আমাদের ডাক্তার সাহেবরা খুবই উদ্বিগ্ন, চিন্তিত। কারণ, তার চিকিৎসা এখানে আর সম্ভব না। কত ভয়াবহ, কত অমানবিক, কত দানবীয় এই সরকার। তারা তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বা, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় , আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের ফরহাদ হালিম ডোনার, হাবিবুর রহমান হাবিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, রাকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সুলতান আহমেদ, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, তাঁতী দলের জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র দলের রাশেদ ইকবাল খান, নরসিংদীর খায়রুল কবির খোকন,গাজীপুরের ফজলুল হক মিলন, মুন্সিগঞ্জে কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা জেলা খন্দকার আবু আশফাক, টাঙ্গাইলের হাসানুজ্জামিল, নারায়নগঞ্জের সাখাওয়াত হোসেন, মানিকগঞ্জের এসএম জিন্নাহ কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুল হালিম, আতাউর রহমান ঢালী, শাহজাদা মিয়া, মামুন আহমেদ, মজিবুর রহমান সারোয়ার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হারুনুর রশীদ, আসাদুজ্জামান রিপন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, রফিকুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন অসীম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, শরীফুল আলম, ওয়ারেস আলী মামুন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, নেওয়াজ হালিমা আরলি, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর