অবরোধ নিয়ে বিএনপিকে পাল্টা হুমকি ওবায়দুল কাদের’র
১৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৪৭
ঢাকা: বিএনপির ঢাকা অবরোধের হুমকির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অবরোধ করতে এলে আমরা পাল্টা অবরোধ করব। দাঁড়াতে দেবো না। কারণ, যারা বলেছেন শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে হবে। এই নির্বাচন যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেয় আমরা দেখব।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শহিদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যৌথভাবে এই সমাবেশ আয়োজন করে।
বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি হলো খুনির দল। এদের হাতে রক্তের দাগ। এদের হাতে ১৫ আগস্টের রক্ত, শিশু রাসেলের রক্ত, বঙ্গবন্ধুর রক্ত, বেগম মুজিবের রক্ত। এদের হাতে জাতীয় চার নেতার রক্ত। এরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল; যেখানে আইভী রহমানসহ ২৩ জনের রক্ত। এদের হাতে ২১ আগস্টের রক্ত।’
তাই বিএনপি নামক অপশক্তির হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি বলে দাবি করেন তিনি। তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আজিমপুর গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক আজিমপুরে শুয়ে আছে। ওটা আর ফিরে আসবে না।’ দলীয় নেতাকর্মীদের খেলায় জিততে হবে এবং এই লড়াইয়ে শেখ হাসিনার সৈনিকেরা জিতবে স্লোগান ধরেন । এ সময় নেতাকর্মীরা তার সাথে সুর মেলান।
শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি বলেন, ‘এই স্পিরিট যেন থাকে? কেউ কেউ বলে বিরোধী দলে থাকলে আওয়ামী লীগের তখন স্পিরিট বাড়ে। সরকারি দলে থাকলে একটু নরম নরম হয়। এখন তো দেখছি স্পিরিট আছে। এটা থাকবে তো?’
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচন চাই। আমরা কেন বাধা দেবো। অবরোধ যারা করবে, ঢাকা অচল করবে- তারাই বাধা দিচ্ছে। এই বাধা যারা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেয় আমরা দেখব।
নৌকা নৌকা স্লোগান ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে নৌকা ছাড়া উপায় নাই। বাংলাদেশের শান্তি চাইলে, সুখ চাইলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। উন্নয়ন চাইলে নৌকা, স্বাধীনতা চাইলে নৌকা। নৌকা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ থাকবে না, গণতন্ত্র থাকবে না। গণতন্ত্র চাইলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। সারাদেশে উন্নয়ন চাইলে শেখ হাসিনার নৌকায় ভোট দিতে হবে।’
‘জিনিসপত্রের দাম সারা দুনিয়ায় বাড়ছে, আমরা শাস্তি পাচ্ছি। দাম বাড়াচ্ছে বড় বড় শক্তি।’ জিনিসপত্রের দাম বাড়ার পেছন বড় বড় শক্তি দায়ী বলেন মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। এখন একটু কষ্ট হচ্ছে। আমরা স্বীকার করি। সত্যকে অস্বীকার করে লাভ নেই। কিন্তু একজন মানুষ আছে, কষ্ট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে যার রাতে ঘুম নাই। তিন ঘণ্টা ঘুমান তিনি। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার মতো এমন সৎ নেতা, এমন পরিশ্রমী নেতা আর কেউ আসেনি। শেখ হাসিনা লিডার। আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে যাই।’
আগামীকাল ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সুদিন আসছে। শেখ হাসিনা থাকলে গণতন্ত্র থাকবে, বাংলাদেশের শান্তি আসবে, মানুষ অন্তত বিদ্যুৎ পাবে, আলো পাবে। আগে খাম্বা ছিল, বিদ্যুৎ ছিল না। এখন শতভাগ বিদ্যুৎ।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা পরিচালনা করেন মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। আর বক্তব্য দেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমদু, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ মহানগর নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে অনেকে উপস্থিত থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ অন্যান্যরা বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকেন।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম