বছরে নষ্ট হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকার খাদ্যশস্য
১৬ মে ২০১৮ ১৮:০৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতেই বছরে সাড়ে ৭৭ লাখ টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৩০ হাজার ৪ শ কোটি টাকা।
বুধবার (১৬ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ক্রিশ্চিয়ান এইডের সহায়তায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘খাদ্যের অপচয় রোধে রাষ্ট্রের ভুমিকা ও খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিজেএএফ) সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
মূল প্রবন্ধ থেকে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন তথ্য। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে উৎপাদিত শস্যের পোস্ট হারভেস্ট লস ও আর্থিক মূল্য বের করা হয়েছে। খাদ্য শস্য, সবজি ও ফলমূলের ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে উৎপাদক থেকে শুরু করে মধ্যস্বত্বভোগী, সংগ্রহকারী, মজুতদার, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীর হাতবদলে। গড়ে উৎপাদিত শস্যের প্রায় ১৩ শতাংশই নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতি হওয়া এসব শস্যের আর্থিক মূল্য মোট বাজেটের প্রায় ১০ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রায় ৩০ শতাংশ।
বিজেএএফের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নষ্ট হওয়া খাদ্যশস্যের মধ্যে চাল ও গমের পরিমাণ ৪৫ লাখ টন, যার বাজার মূল্য ১৮ হাজার কোটি টাকা। আলুর পরিমাণ ১৫ লাখ টন যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। ফল নষ্ট হচ্ছে প্রায় ৮ লাখ টন যার বাজার মূল্য ৮ হাজার ২ শ কোটি টাকা। সবজি নষ্ট হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ টন যার বাজারমূল্য ২ হাজার ৩ শ কোটি টাকা। এ ছাড়া পেঁয়াজ ও ভুট্টা নষ্ট হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ টন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে চার শ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার শস্য নষ্ট হচ্ছে। দেশের এ অপচয় রোধ করা গেলে খাদ্য শস্য আমদানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, খাদ্য শস্যের অপচয় দেশের প্রবৃদ্ধিকে খেয়ে ফেলছে। অপচয়ের মাধ্যমে মানুষের অধিকার ও খাদ্য নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করছে। খাদ্যশস্যের এ ধরনের অপচয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যেমন হুমকি, তেমনি খাদ্য অধিকারকেও বঞ্চিত করছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্যঅধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) সাবেক মহাপরিচালক ও হরটেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনজুরুল হান্নান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম।
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম