ডিসেম্বরে আইএমএফ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি, আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩৮
ঢাকা : আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার সময়ে ৬টি শর্ত দিয়েছিল। এরমধ্যে ২টি শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। এরপরও ঋনের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছি।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফ আমাদেরকে ঋণ দিতে ৬টি শর্ত দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুইটি শর্ত পূরণ করা আমাদের সম্ভব হয়নি। এরপরেও আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে পেরেছি। আগামী ১১ ডিসেম্বরে আইএমএফের বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। মিটিংয়ে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদন হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিট রিজার্ভ সম্পর্কে আমি এখন বুঝতে পারছি না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব সম্পর্কে বলতে পারবো। বিপিএম ৬ অনুযায়ী হিসাব প্রতি সপ্তাহে ওয়েবসাইটে আপলোড করা হচ্ছে।’
মেজবাউল হক আরও বলেন, ‘আমরা যে দুই শর্ত পূরণ করতে পারিনি তার একটি নিট রিজার্ভ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৫ দশমিক ৩ বিলিয়নে রাখা, সেটা হয়নি। অন্যটি হলো রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, বিপরীতে ১৪ হাজার পিছিয়ে রয়েছে আদায়।’
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে এরইমধ্যে সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার এখন ১০ শতাংশের ওপর। আইএমএফের সঙ্গে নন-পারফর্মিং লোন ও মানিলন্ডারিং বিষয়ে গতানুগতিকভাবে আলোচনা হয়েছে। বিএফআইইউ ও দুদক বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছে। এটি সবসময় করা হয়। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। এরইমধ্যে আমরা চলতি হিসাব নিয়ে কাজ করেছি। মূল্যস্ফীতি কমাতে নেওয়া অন্যান্য পদক্ষেপ সম্পর্কেও আইএমএফকে জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে আইএমএফ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। আর ১৩ সদস্যের আইএমএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ। বৈঠকে দ্বিতীয় কিস্তির শর্ত চূড়ান্ত করা হয়। ঋণ চুক্তিতে থাকা বাংলাদেশের প্রথম কিস্তির অর্থ ব্যবহারের অগ্রগতি দেখে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের জন্য আইএমএফের আর্টিকেল-ফোরের অধীনে রিভিউ মিশনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসে।
উল্লেখ্য আইএমএফের মোট ৪৭০ কোটি বা ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি অনুমোদন করার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। ঋণের প্রথম কিস্তির দেয়ার সময় বেশকিছু শর্ত দেয় আইএমএফ। এগুলোর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংক ঋণের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রিজার্ভের হিসাব আইএমএফ স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী করে প্রকাশ, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, শেয়ারবাজারের উন্নয়নসহ বেশকিছু আর্থিক ও নীতি সংস্কারে মধ্যে দিয়ে যেতে হয় বাংলাদেশকে।
সারাবাংলা/জিএস/একে