চিঠি দিয়ে খালাস, উচ্ছেদে গড়িমসি সওজের
২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৪
ঠাকুরগাঁও: জায়গাগুলো সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের। অবৈধভাবে দখল করে এসব এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। স্বাভাবিকভাবেই সেগুলো উচ্ছেদ করার এখতিয়ার রয়েছে সওজের। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়েছে ঠাকুরগাঁও সওজ।
স্থানীয়রা বলছেন, সওজ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম কেবল চিঠিতেই সীমাবদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে তাদের কোনো কার্যক্রম বা তৎপরতা চোখে পড়েনি। এই সুযোগে একটি চক্র অবৈধ স্থাপনাগুলোর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, মুন্সিরহাট, টাংগন ব্রীজ এলাকার জলেশ্বরীতলাসহ ভল্লী এলাকায় সড়ক ও জনপথের (সওজ) মালিকাধীন জমিতে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।
সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র টাংগন ব্রিজ এলাকায় সড়কের পাশে গত কয়েক বছরে শতাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। এতে সড়ক জনপদ বিভাগের অনেক সম্পত্তি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নজরে আসে সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষের।
সওজের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানিয়েছেন, অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে ২০২০ সাল থেকে কয়েক দফায় চিঠি দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁও সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত তিন বছর ধরে সওজের কার্যক্রম ওই চিঠি আদান-প্রদানেই মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর ফাঁকে একের পর এক আরও নতুন নতুন স্থাপনাও গড়ে উঠেছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব অবৈধ স্থাপনা রাতারাতি গড়ে ওঠেনি। সওজের লোকজনের চোখের সামনেই ভবনগুলো গড়ে ওঠছে। শুধু তাই নয়, স্থাপনা তোলার সময়ও সওজের লোকদের ‘ম্যানেজ’ করা হয়ে থাকে। এসব বন্ধ করতে হলে সরষের মধ্যেকার ভূত তাড়াতে হবে।
সওজের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণকারীদের মধ্যে রয়েছেন জয়নাল আবেদীন, সাকিব আহম্মেদ, ফরিদ ও মালেক। জানতে চাইলে তারা বলেন, জমি ফাঁকা করতে অনেক আগে সড়ক বিভাগ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। পরে আর কেউ যায়নি। তারাও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সওজ ব্যবস্থা নিলে তারা বিকল্প পথ দেখবেন বলে জানান।
ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল ইসলামও জমি দখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান করা হচ্ছে। টাংগন ব্রিজ এলাকায় স্থাপনা উচ্ছেদে দাফতরিক কাজ চলমান রয়েছে। শিগগির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সারাবাংলা/টিআর/এনইউ