জিওয়াই ট্রেডের এবার দেড় কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা
২০ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানির ঘোষণা দিয়ে অন্যান্য পণ্য আনা চারটি কনটেইনার জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব কনটেইনার থেকে বিপুল পরিমাণ ডেক্সট্রোজ, গুঁড়া দুধ, কফি মেট ও মেনথল জব্দ করা হয়।
ঢাকার আমদানিকারক জি ওয়াই ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি চার কনটেইনারে এসব পণ্য আমদানি করে। এই চালানে মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এআইআর) শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হক। এ নিয়ে ওই আমদানিকারকের এক মাসের ব্যবধানে আট কনটেইনার পণ্য জব্দ করল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) কায়িক পরীক্ষা ও দাফতরিক প্রক্রিয়া শেষে শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি নির্ধারণ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে রাখা ওই চালানের চারটি কনটেইনার খুলে পরীক্ষা করেন কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার প্রতিষ্ঠান জি ওয়াই ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড চায়না থেকে ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানির ঘোষণা দেন। এমভি ওয়াই জাহাজে চারটি কনটেইনারে করে এসব পণ্য আসে। কিন্তু সেগুলো খালাস হওয়ার আগেই আবারও জাহাজে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর রিটার্ন অব বোর্ড (রোব) ঘোষণা করা হয়।
সন্দেহ হওয়ায় কারণে ১৮ অক্টোবর শিপিং এজেন্টকে চাপ দিয়ে চালানটি লক করে দেয় কাস্টমসের এআইআর শাখা। ১৯ অক্টোবর চার কনটেইনারে থাকা পণ্য চালানগুলোর শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে মাত্র তিন মেট্রিকটন ক্যালসিয়াম কার্বনেট পাওয়া যায়। বাকি বস্তা গুলোতে ১৫ মেট্রিকটন গুঁড়া দুধ, ৬০ মেট্রিকটন ডেক্সট্রোজ, এক মেট্রিক টন কফি মেট ও তিন মেট্রিক টন মেনথল পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার সাইফুল হক সারাবাংলাকে বলেন, এই আমদানিকারকের আরেকটি একটি চালান গত সেপ্টেম্বর মাসে আটক করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) যে চালানটি আটক করা হয় সেটাতে ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আমদানির বিষয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। আমাদের নজরদারির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তারা অভিনব কৌশল অবলম্বন করেন।
তিনি জানান, আমদানিকারক কন্টেইনারগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস না করে সিঙ্গাপুরে ফেরত পাঠাতে রিটার্ন অব বোর্ড (রোব) ঘোষণা করে। পরে জাহাজ কন্টেইনারগুলোসহ সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগের আগ মুহূর্তেই এআইআর শাখার কর্মকর্তাদের নির্দেশে কন্টেইনার চারটি নামানো হয়। সেখানে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের চেয়ে বেশি অন্য পণ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর একই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মিথ্যা ঘোষণায় আনা চার কনটেইনার পণ্য জব্দ করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস। ওই চালানটিতে একইভাবে ক্যালসিয়াম কার্বনেট ঘোষণার নামে ডেক্সট্রোজ ও গুঁড়ো দুধ আমদানি করে। যার মধ্য দিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়।
সারাবাংলা/আইসি/এনইউ