আরও দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির
২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৪৮
ঢাকা: বাজারে আরও দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাকিস্তানি ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি দরে। মাংসের মতো মাছের বাজারও চড়া রয়েছে।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজিতে। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। রাজধানীর মহাখালীর বউবাজারেও ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ টাকা ও পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজারে দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়।
মুরগির দোকানদার হিরণ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্রয়লার দুই দিন আগেও ১৮০ টাকা কেজি ছিল। আজ ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারে দেশি আর ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে গেছে।’
আরও পড়ুন- সবজিও নাগালের বাইরে
মাংসের মতো দাম বাড়তি মাছের বাজারেও। কম আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনেন পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজি এখন ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া রুই, কাতল, কালিবাউশ ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারাই জানাচ্ছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে এসব মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কম ছিল।
এদিকে কয়েক মাস ধরেই ডিমের বাজার অস্থির। শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের একটি ডিম কিনতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪ টাকা। অথচ সরকার একেকটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
সরকারের দাম বেঁধে দেওয়া আরেক পণ্য পেঁয়াজ, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি যার দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজারদরে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
মাছ-মাংস-ডিমের মতো সবজির বাজারও ভীষণ চড়া। বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরের নিচে সবজি পাওয়াই দায়। এর মধ্যে পাঁচ ধরনের সবজি দামের দিক থেকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। আর কাঁচামরিচ পৌঁছে গেছে ডাবল সেঞ্চুরিতে। বাজারে একমাত্র পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মহাখালীর বউবাজারে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঢেড়স ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা ও বরবটি ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শীতকালীন আগাম শিম ২০০ টাকা কেজি, গাজর ১০০ টাকা, শশা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ১৩০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এই বাজারে। পাতাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা পিস দরে। এই বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আলু ৫০ টাকা ও রসুন ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে এই বাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল সারাবাংলাকে বলেন, বেশিরভাগ সবজির দাম ৮০ টাকার ওপরে। চার-পাঁচটি সবজির দাম তো ১০০ টাকার বেশি।
পোশাক কর্মী সোহেলের সঙ্গে কথা হলো এই বাজারে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, এখন আর সবজি কিনে খাওয়ার উপায় নেই। সবজির দাম আগে কখনো এতো বেশি দেখিনি। মাছ-মাংস বাদ দিয়ে একটু শাক-সবজি খাইতাম। এখন সেই সবজিও আমাদের নাগালের বাইরে।
কারওয়ান বাজারসহ আরও কয়েকটি বাজারেও গোল বেগুন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেল। করলা, কচুরমুখি, বরবটি, টমেটোর দাম এসব বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর ঢেড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কম দামি সবজির মধ্যে মূলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা আর পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল এসব বাজারে।
বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ তিনেক আগে টানা কয়েকদিন সারাদেশে বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে সবজির মাঠে। তলিয়ে যায় বিভিন্ন ফসলের মাঠ। এত সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ কারণেই বাজারে এখন সবজির দাম বেশি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর
ডিমের বাজার নিত্যপণ্য বাজারদর মাছের বাজার মুরগির দাম সবজির দাম