Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আর মাস নয়, মাত্র কয়েকটা দিন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৪৮

ঢাকা: সরকার হটানোর আন্দোলনে ‘আর মাস নয়, মাত্র কয়েকটা দিন’ বাকি আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কৃষি বিষয়ক এক সেমিনারে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব এই ডাক দেন।

রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালী দল’ এর উদ্যোগে ‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি-কৃষক এবং নাভিশ্বাস’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সকলকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে, এই কথায় যদি আমরা সবাই বিশ্বাস করি তাহলে আসুন আগামী দিনগুলোতে যে কয়েকটা দিন আছে, এখন কিন্তু মাসও নাই, কয়েকটা দিন আছে। সেই দিনগুলোতে বুকের মধ্যে সাহস নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা তো মারবে, মারছেই তো এই ১৫ বছরে আমাদের হাজার হাজার লোককে মেরে ফেলেছে, আমাদের লোককে গুম করেছে, আমাদের ৫০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। গতকালও ঢাকা মহানগরে ৭৭ জনকে অ্যারেস্ট করেছে। কোনো কথা নাই নামটা ঢুকিয়ে দিলে হয়ে গেল। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, খাদ্যদ্রব্য বলেন, মানুষের জীবনের মূল্য বলেন সব কিছু নির্ভর করছে এই সরকারকে সরাতে না পারলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না, জাতির অস্তিত্ব থাকবে না, স্বাধীনতার অস্তিত্ব থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘কথা একটাই, আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামি। আজকে একটা বিষয় আপনাদের আশা যোগাবে, সাহস যোগাবে যে, দেশের সকল মানুষ এক হয়েছে, সমস্ত রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। বাম-ডান সকলেই কিন্তু একটা কথা বলছে যে, এই সরকারের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। শেষবারের মতো বলতে চাই দয়া করে পদত্যাগ করুন, মানে মানে শান্তিতে আপনারা একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান, দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা বানিয়েছে। এটার কোনো কিছু ঠিক নেই। তারাও বলেছে যে, যদি পরিবেশ অনুকূল হয়। তার মানে পরিবেশ অনুকূল নয়। এখনও পরিবেশ অনকুল হয়নি। তাহলে দরকারটা কী, পদত্যাগ করে আসো আমাদের সঙ্গে, আমাদের সঙ্গে আসো।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থাটা এমন হয়েছে, সাধারণ মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, লাউ কিনতে পারছে না, শাক-সবজি কিনতে পারছে না। কিন্তু নির্বাচনে ঘুষ দেওয়ার জন্য ডিসি-ইউএনওদের জন্য নতুন করে ৩৬৫ কোটি টাকার গাড়ি কেনা হচ্ছে। তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে আলাদা করে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন ইতোমধ্যে তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে। বিষয়টা ওই জায়গায়। গত ১৫ বছরে কী হারে ওরা লুট করেছে, দুর্নীতি করেছে তা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। প্রতিটি পয়সা আমাদের এই সমস্ত জিনিসপত্রের দাম সব মিলে আমাদের পকেট থেকে নিয়েছে, ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স মিলে নিয়েছে, যে ঋণ করেছে সেই ঋণের ভার আমাদের ঘাড়ে এসে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘ভোট দেওয়ার অধিকার চলে গেছে, বিচার পাওয়ার অধিকারও আমার নাই। সবাই জড়িত হয়ে গেছে.. এই যে প্রক্রিয়া, লুটপাট দুর্নীতি, সরকার দেশে মগের মল্লুক তৈরি করেছে। সেই মগের মুল্লুক থেকেও এরা বের হতে চায় না। এখন নতুন সুর শুরু করেছেন। কালকে উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনারা কী? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা। আপনারা এই রাষ্ট্রটাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের একটা রাজত্ব বানিয়ে দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি যে, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে, গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করছি। কারণ, আমাদের তো উপায় নেই আমরা খালি হাতে আছি। আমাদের হাতে তো বন্দুক-পিস্তল নেই যে, আমি আপনাকে ভয় দেখাব, গ্রেফতার করে নিয়ে আসব, আপনাকে আমি ডিবিতে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার-নির্যাতন করব সেই ক্ষমতা তো নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই ক্ষমতা আছে, মানুষকে সংগঠিত করা, মানুষকে বলা যে, তোমরা এই অবস্থা থেকে বেরুতে চাও, মুক্তি পেতে চাও তোমার অন্য কোনো উপায় নেই রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। আপনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবেন যে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা কী করছে? তারপরে যাব, সেটা হবে না। আপনাকেও রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে, সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি গোলাম হাফিজ কেনেডীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিনসহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কৃষিবিদরা।

সারাবাংলা/এজেড/আইই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সালমান শাহ্‌ স্মরণে মিলাদ মাহফিল
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৩

নাফ নদীর মোহনায় ২ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৯

সম্পর্কিত খবর