Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নবপত্রিকা প্রবেশ আর বিহিত পূজায় মহাসপ্তমী আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১০

চট্টগ্রামে ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গাকে প্রণাম এক ভক্তের। ছবি: শ্যামল নন্দী

ঢাকা: শুক্রবার ষষ্ঠীতে অকাল বোধনের মাধ্যমে জাগ্রত হয়েছেন দেবী দুর্গা। আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) নবপত্রিকা প্রবেশ, বিহিতপূজাসহ নানা আয়োজনে থাকছে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী।

দুর্গোৎসবের প্রথম দিন দুর্গতিনাশিনী দেবীর অধিষ্ঠান, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। সন্ধ্যায় মণ্ডপগুলোতে বোধনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গা জাগ্রত হয়েছেন। এরপর আজ মহাসপ্তমীতে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন এবং ষোড়শ উপচার অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা করা হবে।

এ ছাড়াও উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হবে। সকালে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন ভক্তরা। সপ্তমী পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিভিন্ন মণ্ডপে ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, রামায়ণ পালাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

শনিবার মহাসপ্তমীর দিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিট থেকে রাত ৭টা ৫১ পর্যন্ত হবে দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তমীবিহিত পূজা। রাত ১১টা ২১ মিনিট থেকে ১২টা ৯ মিনিটের মধ্যে দেবীর অর্ধরাত্রবিহিত পূজা হবে।

মহাসপ্তমীতে বিহিত পূজার জন্য প্রস্তুত সব মণ্ডপ। ছবি: শ্যামল নন্দী

এদিকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব মণ্ডপে শুক্রবার সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে মহাষষ্ঠী পূজা। সকালে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ, সন্ধ্যায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাস এবং ষষ্ঠী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সঙ্গে ছিল পুষ্পাঞ্জলি, আরতি ও প্রসাদ বিতরণ।

মূল প্রতিমায় দেবীর রূপ কল্পনা করে আট উপচারে দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী পূজায় ভক্তরা দেবীর বন্দনা করেছেন। সকাল থেকেই চণ্ডিপাঠে মুখরিত ছিল দেশের সব মণ্ডপ। ঢাকের বাদ্য আর শঙ্খের ধ্বনি মণ্ডপগুলোতে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। সকালে ভক্তদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বিকেল থেকে ভিড় বাড়তে থাকে।

ষষ্ঠী পূজা উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মিশনে সারাদিন ছিল পূজা-অর্চনা ও ভক্তিমূলক সংগীতের আয়োজন। এ ছাড়াও রমনা কালীমন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিউশন, কারওয়ানবাজারের মিডিয়াপাড়া, বনানী পূজামণ্ডপসহ পুরান ঢাকার শাঁখারী বাজারের মণ্ডপগুলোর প্রবেশমুখে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকৃতির তোরণ। মূল বেদী পর্যন্ত ঝুলানো হয়েছে নানা রঙের বাতি। এ ছাড়াও বিভিন্ন মণ্ডপ ঘিরে বসেছে মেলা।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। সেই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হয় এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা, আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে রক্ষা করলেন ত্রিভুবন। এ কারণে দুর্গা কখনো দুর্গতিনাশিনী, কখনো সংকটনাশিনী।

সেই দেবী প্রতি বছর শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে বাপের বাড়ি বেড়াতে মর্ত্যলোকে আসেন। দেবীর এই গৃহাগমন ঘিরেই পালিত হয় মহা উৎসব দুর্গাপূজা, যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, এ বছর মা দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে আগমন করেছেন, প্রস্থানও করবেন ঘোড়ায় চড়ে। দেবীর আগমন ও বিদায় একই বাহনে হলে তা অশুভ ইঙ্গিত। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি-মারামারি বেড়ে যেতে পারে। তাই পাঁচ দিনের পূজার প্রার্থনায় থাকবে সব অশুভের বিনাশের কামনা।

শুক্রবার ষষ্ঠীতে অকাল বোধনের মাধ্যমে যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, তার সমাপ্তি ঘটবে আগামী মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে। পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ জানিয়েছে, দেশে এ বছর ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে চলছে এই শারদীয় দুর্গোৎসব।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

টপ নিউজ দুর্গাপূজা দেবী দুর্গা নবপত্রিকা প্রবেশ বিহিত পূজা মহাসপ্তমী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর