‘ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হবে’
২১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:২৯
জাহাঙ্গীর কবির নানক। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এর পর আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন কঠিন দুঃসময়ে। এ সময় তার নেতৃত্বে যুবলীগ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। ছাত্রলীগ থেকে তৃণমূল হয়ে উঠে আসা আওয়ামী পরিবারে ভরসার মুখ হয়ে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় আছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সময় তিনি ছিলেন বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ওই কালরাতে ঢাকায় থাকার সুবাদে দেখেছেন সেসময়ে দলীয় রাজনীতির পুরো পরিস্থিতি, তৎকালীন নেতাদের হীনমন্যতা। ‘বিডিআর বিদ্রোহ’র সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শান্তির পতাকা হাতে নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যান। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের রাজনীতি সমন্বয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার সমকালীন রাজনীতি ও নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন সারাবালা’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট নৃপেন রায়ের সঙ্গে। সেই কথপোকথনের উল্লেখযোগ্য অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
সারাবাংলা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে আপনাকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের রাজনীতি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
জাহাঙ্গীর কবির নানক: আমি ধন্যবাদ জানাই, আমার নেত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি; তিনি আমাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন। সে দায়িত্ব অনুযায়ী বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সার্বিক বিষয়গুলো সমন্বয়ের চেষ্টা করব।
সারাবাংলা: ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে রাজপথে আপনাদের কী ভূমিকা থাকবে?
জাহাঙ্গীর কবির নানক: ২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় কর্মসূচি দিয়েছে। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইবে। সেক্ষেত্রে আমরা গণমানুষের জানমালের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে সতর্ক দায়িত্ব পালন করব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। এই দলটি বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। বিএনপি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আমরা প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন থাকি। ২০১৪ সালে তারা কর্মসূচির নামে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। তাদের ব্যাপারে আগেও বলেছি, সাপকে বিশ্বাস করা যায়ম কিন্তু বিএনপি-জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না। একটি কথা আমি বলে দিতে চাই, তারা যদি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর পানি ঘোলা করতে চায় সেটা করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে আমরা তা মোকাবিলা করব। তাদের মনে রাখা উচিত, ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হবে।
সারাবাংলা: আপনাকে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও বিএনপির অক্টোবরের আসন্ন কর্মসূচির আগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? এই দায়িত্ব পালনে আপনি কতটুকু সফল হবেন বলে আশাবাদী?
জাহাঙ্গীর কবির নানক: আমি মনে করি সবকিছুই সম্ভব। চেষ্টা করলে সবকিছুই করা যায়। আমার কাছে অসম্ভব বলে কোনো জিনিস নাই। মাননীয় নেত্রীর দোয়া, সমর্থন ও সহযোগিতায় অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। আজকের দিনেও যেটিকে অসম্ভব মনে হচ্ছে সেটিকেও সম্ভব করতে পারব বলে আমরা দৃঢ় আশাবাদী।
সারাবাংলা: বিএনপি কি নির্বাচনে অংশ নেবে? আপনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কী বলে?
জাহাঙ্গীর কবির নানক: প্রথমত, বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না- এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নাই। দেশে নির্বাচন এলে ওদের নিয়ে কেউ তেমন আগ্রহ দেখায় না। আবার দলগতভাবে তারা নির্বাচনে এলেও ভরাডুবি হয়। ফলে নির্বাচন থেকে সরেও যায়। কিন্তু বিএনপি বলছে যে, তারা নির্বাচন হতে দেবে না। এটি হলো সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির একটি অপচেষ্টা। বাংলাদেশে ফের ১/১১ মতো কোনো সরকার মানুষ দেখতে চায় না।
সারাবাংলা: বিএনপির আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আপনাদের অবস্থান জানতে চাই।
জাহাঙ্গীর কবির নানক: আমরা একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে অবশ্যই বিএনপির সবধরনের অপরাজনীতির চেষ্টা মোকাবিলা করব। এই দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা প্রতিহত করতে, গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার প্রয়োজনে অবশ্যই নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের দল হিসেবে সেই নির্বাচনের অংশ নেবে। আগামী জানুয়ারিতে যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করব। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের কাজ শুরু করে দিয়েছি।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম