Monday 21 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোরআন শরিফ নিয়ে মণ্ডপে যাওয়া ব্যক্তি গ্রেফতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:০৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে দুর্গাপূজা মণ্ডপ থেকে কোরআন শরিফসহ এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছে জনতা। পুলিশ তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিলেও গভীর রাতে আবারও অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে।

শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের উত্তর মির্জাপুর গ্রামে সোমবাড়ি পূজামণ্ডপ থেকে ওই ব্যক্তিকে প্রথমে আটক করেন দর্শনার্থীরা।

গ্রেফতার মো. শাহআলমের (৩৮) বাড়ি নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল উপজেলায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সোমবাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক জুটন নন্দী সারাবাংলাকে জানান, রাত ৮টার দিকে মণ্ডপে সন্ধ্যারতি চলছিল। এসময় শরীরে সাদা কাপড় জড়ানো অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে একটি ব্যাগ নিয়ে দর্শনার্থীদের সারিতে গিয়ে বসেন। তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় এবং এলাকার কেউ তাকে চিনতে না পারায় কৌতুহলবশত মণ্ডপের কয়েকজন তার পাশের চেয়ারে গিয়ে বসেন। তার চেয়ারের পাশে মাটিতে ব্যাগটি রেখেছিল। ওপরের অংশ খোলা ছিল। পূজামণ্ডপের যুবকদের মধ্যে একজন ব্যাগের ভেতরে কোরআন শরিফের মতো কিছু দেখতে পান। তখন তিনি বিষয়টি মণ্ডপের কর্মকর্তাদের জানান।

জুটন নন্দী বলেন, আমরা লোকটির কাছে ব্যাগ চাইলে সে দিতে না চাওয়ায় আমরা কেড়ে নিই। তখন সে অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকে। ব্যাগের ভেতরে আমরা একটি কোরআন শরিফ ও কয়েকটি জ্বীন-হাজিরের বইপত্র পাই। মণ্ডপে পুলিশ ছিল। তারা এসে আমাদের কাছ থেকে লোকটিকে নিয়ে থানার দিকে চলে যান। আমাদের ধারণা, কুমিল্লার মতো মণ্ডপের মধ্যে কোরআন শরিফ রেখে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি তৈরির জন্য এসেছিল ওই ব্যক্তি।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি নিজেকে মাইজভাণ্ডার শরিফের ভক্ত হিসেবে পরিচয় দেন। রাত ১১টার দিকে পুলিশ থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেয়। এরপর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে রাত ২টার দিকে তাকে ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার শরিফ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, গ্রেফতার করে থানায় এনে আমরা তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তার বাড়ির ঠিকানা নিয়ে সেখানে লোকাল থানার পুলিশ পাঠিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়। সব মিলিয়ে আমাদের কাছে যে তথ্য, সেটা হচ্ছে সে ভবঘুরে প্রকৃতির। মাজারে-মাজারে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মাঝে মন্দিরেও যায়। এক বছর আগে পরিবারের লোকজন তাকে একবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে ভর্তি করেছিল। সেটার সার্টিফিকেটও আছে।

তিনি বলেন, এসব তথ্য সঠিক কি না, আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমরা তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। তবে পূজামণ্ডপে গিয়ে সে এমনিতেই চেয়ারে বসে ছিল বলে জানতে পেরেছি। তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতেও পারে, না-ও থাকতে পারে। সেটা আমরা আরও তদন্ত করে দেখছি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীতে কুমিল্লার এক পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় সারাদেশে বিভিন্ন মণ্ডপে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

সারাবাংলা/আরডি/আইই

টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর