Tuesday 22 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাঁশখালী-সাতকানিয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি, ২ নারী নিহত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:০৫ | আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৩৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র আঘাতে চট্টগ্রামের অন্তত ছয় উপজেলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুই নারী নিহত ও অন্তঃত ৮৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা উপড়ে সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া গাছপালা উপড়ে পড়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে বাঁশখালীর সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড় হামুন। কক্সবাজার এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে রাত ১টার দিকে সেটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে জেলা ও ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘উপকূলীয় ছয় উপজেলা বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড এবং কর্ণফুলী উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক চিত্র পেয়েছি। সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়ায়ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা দু’জন নিহতের তথ্য পেয়েছি। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কয়েকটি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ তথ্য আমরা এখনও পাইনি।’

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে এক লাখ ১১ হাজার মানুষ হামুন’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চার হাজার ৭৮৪টি বাড়ি আংশিক এবং ২৮৩টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। বনাঞ্চলে গাছপাড়া বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মৎস্য খাতে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত গবাদি প্রাণীর মধ্যে ১১টি গরু এবং ভেড়া ও ছাগল মিলিয়ে ৭০ টির মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে জেলা প্রশাসন।

ছাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে গাছচাপায় ৭০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। সাতকানিয়ায় আরও একজন নিহতের তথ্য পেলেও বিস্তারিত কিছু এখনও তারা জানতে পারেননি। বিভিন্ন ইউনিয়নে বিধ্বস্ত ঘর, উপড়ে পড়া গাছপালার চাপায় ৮৫ জনের মতো আহত হয়েছে।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নে গাছচাপায় বকুমা খাতুন (৬৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক গাছপালা ভেঙ্গেছে। গাছ ও ডালপালা ভেঙ্গে বিদ্যুতের সংযোগ লাইন ছিঁড়েছে। ১২৩টি ঘর আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য এসেছে।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানিয়েছেন, উপজেলার বিভিন্নস্থানে গাছ পড়ে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মূল সড়কেও যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। সরল ইউনিয়নে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বাঁশখালী ও সাতকানিয়া উপজেলা পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জ্যেষ্ঠ্য মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ছাড়া সকল উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ চট্টগ্রামে তাদের অন্তত ৮১টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাঁশখালীতে সবচেয়ে বেশি ৩১টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

‘ঘূর্ণিঝড় হামুন’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর