Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভেজাল পণ্য: পুরো রোজায় মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত


১৭ মে ২০১৮ ০৯:১৪ | আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০৯:১৮

।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রমজান এলে ভেজাল পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়াটা নতুন কিছু নয়। পণ্যের দামও চলে যায় ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তবে এবারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রমজান শুরুর আগেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে র‌্যাব-পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকে তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন তারা। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, রমজান মাসজুড়ে তারাও খাদ্য নিরাপদ রাখতে অভিযান চালাবেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ মে) চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এ বছর রোজা শুরু হচ্ছে শুক্রবার (১৮ মে)। রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেই রাজধানীর বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিষাক্ত ইথোফেন ব্যবহার করে আম পাকানোর অভিযোগে ধ্বংস করা হয় প্রায় ছয়শ’মণ আম; জরিমানা করা হয় ব্যবসায়ীদেরও। রাজধানীর বাদামতলীতেও একই ধরনের অভিযানে জরিমানা ও সাজা দেওয়া হয় ব্যবসায়ীদের।

অভিযান সম্পর্কে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইয়ের অনুরোধে র‌্যাব রমজানজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে যাবে। যেখানেই ভেজাল পণ্যের সন্ধান পাওয়া যাবে, সেখানেই অভিযান চালানো হবে। ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারী কিংবা বিক্রেতা— সবাইকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। গত এক সপ্তাহে আমরা কাউকে ছাড় দেইনি। জনগণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আরো বেশি অভিযান চালাব আমরা।’

ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য আছে, কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উপকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য ও রাসায়নিক রঙ মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন পণ্যে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে আবার কৌশলে বাইরে তালা ঝুলিয়ে নোংরা পরিবেশে উৎপাদন করা হচ্ছে এসব ভেজাল পণ্য।

বিজ্ঞাপন

মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘রমজান মাসজুড়ে পুরো ঢাকাকে চার ভাগে ভাগ করে অন্তত ৩২টি টিম অভিযান চালাবে। অভিযানে দু’টো বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে— ভেজাল পণ্য ও ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া। কেউ এ ধরনের অপরাধ করলে প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।’ মৌসুমী ফলে রাসায়নিক প্রয়োগকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, বড়কাটরা, সদরঘাট, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, রহমতগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, কোতোয়ালি, ইসলামবাগ, বংশাল, শ্যামপুর, কদমতলী, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, পোস্তগোলা, ধোলাইখাল, ফরিদাবাদ, ইসলামপুর, সোয়ারীঘাট, দেবীদাস লেন, কামালবাগ, শহীদনগর, উত্তরার উত্তরখান, দক্ষিণখানে নকল কারখানা রয়েছে। এছাড়া টঙ্গীসহ ঢাকার আশপাশের জেলার বেশ কয়েকটি জায়গা ও দেশের অন্যান্য স্থানেও ভেজাল পণ্য তৈরির কারখানা রয়েছে।

আগের বছরগুলোতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে রমজান আসার আগে একটি লিফলেট বিলি ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তবে সেই কর্তৃপক্ষ এবার নড়েচড়ে বসেছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে। নিজস্ব জনবল দিয়েও অনেক জায়গাতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। পাশাপাশি বিএসটিআইও যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. মোখলেসুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্যে নিরাপত্তার সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করে তা মোকাবিলায় ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, জেলা-উপজেলায় মাইকিং করা হচ্ছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘রমজান মাসে রাজধানীর বিভিন্ন ইফতার বাজারেও আমরা অভিযান চালাব। বিভিন্ন ফলের আড়তেও অভিযান চালানো হবে, অভিযান চলবে নিত্যপণ্যের দোকানলোতেও। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যেন কোনো পণ্যে কেউ ভেজাল দিতে না পারে।’

সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম/টিআর

* দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর