জামায়াত ঠেকাতে বিশেষ কৌশল ডিএমপির
২৭ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২০
ঢাকা: রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহাসমাবেশের ডাক দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপিতে চিঠি দিলেও ডিএমপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতকে সভা-সমাবেশের কোনো অনুমতি দেওয়া হবে না। ডিএমপির অনুমতি না পেলেও জামায়াত-শিবির সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
জামায়াত ঘোষণা দিয়েছে কমপক্ষে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে সমাবেশে। জামায়াতের এই ঘোষণা মাথায় রেখেই জামায়াত ঠেকানোর পরিকল্পনা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
জামায়াতের সমাবেশ ঠেকাতে যতরকম কৌশল রয়েছে তার সবগুলোই ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কোনোভাবেই জামায়াতকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ভিড়তে দেওয়া হবে না। পুরো মতিঝিল এলাকা কর্ডন করার চিন্তা করছে ডিএমপি।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান কার্যালয়ের সামনে সড়কের উভয়পাশেই থাকবে পুলিশের ব্যারিকেড। এ ছাড়া দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিলের দিকে যেতে ইত্তেফাক মোড়ের উভয় পাশের সড়ক এবং নটরডেম কলেজের সামনে আরামবাগ উভয় সড়কে বেরিকেড দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ডিএমপি। এরইমধ্যে ডিএমপির পক্ষ থেকে পুরো মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। যা দিয়ে গতিবিধি ও খারাপ কিছু ঘটানোর চেষ্টা করলে তা নজরদারি করা হবে।
এ ছাড়া মতিঝিল এলাকায় প্রবেশের যত ছোট বড় সড়ক ও অলিগলি রয়েছে তার প্রত্যেকটিতে বেরিকেড দেওয়া হবে। এমনকি কোথাও কোথাও তল্লাশি জন্য আর্চওয়ে বসানো হবে। যাতে করে মতিঝিল এলাকায় কর্মরতদের আইডি কার্ড দেখানোর মাধ্যমে প্রবেশ করতে দেওয়া যায়।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) ভোর হওয়ার আগেই এই ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
অন্যদিকে মতিঝিল এলাকায় আগামীকাল সকল প্রকার হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আবাসিক হোটেল গতকাল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো গেস্ট ওঠানো হয়নি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
জানতে চাইলে হিরাঝিল হোটেলের ম্যানেজার আশিকুর রহমান সোহান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামীকাল হোটেল বন্ধ থাকবে। পুলিশ নিষেধ করে গেছে। এছাড়া হোটেলের সামনেও যেন কেউ দাড়াতে না পারে সেজন্যও নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ।’
তবে পল্টন থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
জামায়াত যাতে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোনো প্রকার জমায়েত বা সমাবেশ করতে না পারে সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে পুলিশ। প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করতে পারে পুলিশ। সে জন্য পুলিশের রায়ট কার, এপিসি কার, জল কামান, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও সিটিটিসির ডগ স্কোয়াটও মতিঝিল এলাকায় অবস্থান করবে। এমনকি ভারী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুলিশ অবস্থান করবে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মতিঝিল ব্যাংক পাড়া এলাকায় কাউকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অর্থনীতির দিক থেকে মতিঝিল এলাকা দেশের হার্ট পয়েন্ট। সেখানে কে জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করলে বযবস্থা নেবে পুলিশ।
অন্যদিকে ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাময়াতের সঙ্গে সংঘাত দেখা দিলে তা অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই মুলত ডিএমপি সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করবে। মতিঝিলের পুরো এলাকা কর্ডন করে রাখা হবে।
এ ছাড়া ২৯ অক্টোবর মেট্টোরেল রুটের মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করা হবে। এ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
সারাবাংলা/ইউজে/একে