Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমাবেশ শুরুর আগেই প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা: তথ্যমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২৩

ড. হাছান মাহমুদ, ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলে বিএনপি সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি কোcbf রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান। বিচার বিভাগের প্রধান। তার বাসভবনে তারা (বিএনপি) হামলা চালিয়েছে এবং সেখানে ঢুকে পড়েছে।’

রোববার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে সম সাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় এ সব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কখনো প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়নি। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে হাজার হাজার মিছিল সেই বাসভবনের সামনে দিয়ে গেছে সরকারি দল, বিরোধীদল। কাকরাইল মোড়ে অনেক সময় অনেক গণ্ডগোল হয়েছে, কিন্তু কখনো প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়নি। তবে এর আগেও বিএনপির আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ের দরজায়, প্রধান বিচারপতির খাস খামারার দরজায় লাথি মেরেছে। অর্থাৎ তারা বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠানকে তোয়াক্কা করে না। গতকালের ঘটনায় সেটি প্রমাণ হচ্ছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশর ডাক দিয়েছিল। সরকার, পুলিশ প্রশাসন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসন তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তারা যেখানে সমাবেশ করতে চেয়েছে, সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

সরকার বিএনপি এবং জামায়াতের সমাবেশ করার বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে তিনি ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালায়, জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা চালায় এবং পুলিশ বক্সের ওপর তারা হামলা চালায়, পুলিশ বক্স জ্বালিয়ে দেয়। এরপর সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক হচ্ছে তারা পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ১৯টি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। আর এখানে বিএনপি-জামায়াত হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম হাসপাতালে হামলা কোনো রাজনৈতিক দল করেছে বলে আমার জানা নেই।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হামলা চালিয়ে ৮০০ মানুষকে হত্যা করার পরও বিএনপি একটি শব্দ উচ্চারণ করেনি। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে একটি শব্দ উচ্চারণ করেনি বিএনপি এবং জামায়াত। বরং ইসরাইলে বাহিনীর অনুকরণে তারা গতকাল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে এবং তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। নাইটিঙ্গেল মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে বিএনপি একজন পুলিশকে পিটিয়ে পরে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। গতকাল পুলিশের শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। দুইজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া আনসার বাহিনীর ২৫ সদস্য আহত হয়েছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি হাসপাতালে গেছি। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে গেছি। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালেও গেছি। সেখানে বহু পুলিশ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বেশিরভাগ পুলিশের মাথায় তারা আঘাত করেছে, যাতে মৃত্যু হয়। যে পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে আপনারা সেই জায়গায় দেখেননি, আমি লাশ দেখেছি। পিছনে কোপ দিয়ে নামিয়ে ফেলা হয়েছে, মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য। এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। এগুলো সন্ত্রাসী দলের কাজ। বিএনপির-জামায়াত যে আবার ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের অবস্থায় ফিরে এসেছে গতকাল আপনারা দেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এভাবে বর্বরতা কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারে না। এটির দায় শুধু যারা করেছে তাদের নয়, এটির দায় এটির নির্দেশ দাতাদের। কারণ তারা এই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। তারা বোমা নিক্ষেপ করেছে, পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করেছে এবং পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। যদি সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় না দিদো, তাহলে শতাধিক পুলিশ-আনসার সদস্যসহ প্রায় দেড় শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহত হতো না। পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে বিধায় বিএনপি নেতাকর্মীরা আহত হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকালের সংঘর্ষে শামীম মিয়া নামের যে যুবদল নেতা মারা গেছে বলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা বলেছেন, তাদের রাজনীতি তো মিথ্যাচারের ওপর। তার পরিবার বলছে দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তার গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। হাসপাতাল বলছে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। অর্থাৎ কী রকম মিথ্যাচার।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ সদস্য হত্যার দায় এড়ানোর জন্য একজন সাধারণ মানুষ তাদের এই অপকর্মের জন্য মৃত্যুবরণ করেছে, সেটিকে যুবদল বলে পরিচয় দিচ্ছে। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশ, জনগণ, সরকার বরদাশ করতে পারে না এবং আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দিতে পারি না। যারা এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা দায় এড়াতে পারেন না। আমাদের দায়িত্ব দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা, জনগণের স্বস্তি স্থাপন করা, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’

সারাবাংলা/জেআর/একে

আগুন টপ নিউজ বিএনপি বিচারপতির বাসভবন হামলা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর