ওয়াশ খাতে এক বছরে ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা
২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৩৮
ঢাকা: বাংলাদেশে ওয়াশ খাতে দেশে একবছরে ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৭৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা মোট দেশ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। ওয়াস খাতের তিনটি উপাদান হচ্ছে পানি, স্যানটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিন এর ক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি ভাবে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে ২০২০ সালে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ওয়াশ অ্যাকাউন্টস প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
রোববার (২৯ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রকাশ করে সংস্থাটি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়েজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ.মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম। অতিথি হিসাবে ছিলেন দক্ষিণ এশিয়া, ওয়াটার এইড এর আঞ্চলিক ডিরেক্টর ড. খায়রুল ইসলাম এবং ওয়াটার এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিজ হাসিন জাহান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশের এ তিন খাতের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিনে মাথাপিছু ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৯৩ টাকা। পানির জন্য ৫০০ টাকা এবং স্যানিটেশনের জন্য খরচ হয়েছে ৮৯৮ টাকা করে। ওয়াশ খাতের মোট ব্যয়ের মধ্যে ৬০ শতাংশ হয়েছে স্বাস্থ্যবিধিতে, ২৬ শতাংশ হয়েছে স্যানিটেশনে এবং ১৪ শতাংশ ব্যয় হয়েছে পানির জন্য।
এদিকে ২০২০ সালে গড়ে প্রতিটি পরিবারের পানি বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৫০২ টাকা। এছাড়া স্যানিটেশন বাবদ ১ হাজার ৯৮৫ টাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮হাজার ৮৭ টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ পরিবার প্রতি ওয়াশ ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৪ টাকা, যা একটি পরিবারের বার্ষিক আয়ের ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। শহর ও গ্রামে উভয় ক্ষেত্রেই দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের আয়ের একটি বড় অংশ ব্যয় করছে ওয়াশ খাতে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘ওষুধের দামের বড় অংশ ব্যক্তি পর্যায় থেকে যাচ্ছে। এ ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে বাণিজ্য রয়েছে। তাদের আমরা ধরতে পারছি না। ধরলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। এটি বিশ্বব্যাপী আছে। বিশ্বে যেমন অস্ত্রের ব্যবসা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রান্স ও জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে মানুষ ট্যাপের পানি খায়। তারা বোতলের পানি খায় না। আমাদের দেশে বোতলের পানির ব্যবস্যা জমজমাট। এর পেছনে কারণও আছে। ওয়াশার পানি নিরাপদ নয়। মাঝে মাঝে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। এখানে আমাদের অনেক কিছু করার আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যেও অবসান হবে। সবার জন্য সুস্বাস্থ্য, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠা, জলবায়ু, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, শোভন কর্মসংস্থান এবং গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি এসডিজি ৬ অর্জনে সবার জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের প্রাপ্যতা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা জরুরি। এ জন্য ওয়াশ খাত নিয়ে ভাবতেই হবে। ওয়াশ খাতের ব্যয় সঠিকভাবে না হলে উন্নয়ন সম্ভব হবে না। এই সার্ভের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে বাজেটের টাকা কোথায় কীভাবে খরচ হচ্ছে। পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও অন্যান্য অংশীজনদের তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন জরিপ পরিচালনা করে করে থাকে।’
সারাবাংলা/জেজে/একে